ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরার বায়ো-ভিলেজের সফলতার চর্চা ভারতজুড়ে

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২২
ত্রিপুরার বায়ো-ভিলেজের সফলতার চর্চা ভারতজুড়ে ত্রিপুরার বায়ো-ভিলেজের সফলতার চৰ্চা ভারতজুড়ে

আগরতলা (ত্রিপুরা): বায়ো-ভিলেজ ২.০ ভাবনা মনে আসা এবং তা প্রকল্প রূপে লেখার সময় মনে হয়নি যে এ ক্ষুদ্র প্রয়াস কখনো বৃক্ষের আকার নেবে। তবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বায়ো টেকনোলজি দপ্তরের প্রত্যেক সহকর্মীর আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং অবদানের জন্যই এমন সফলতা এসেছে।

এছাড়াও প্রকল্প বাস্তবায়নে ছোট এ বায়োটেকনোলজি দপ্তরের পক্ষে কখনই সম্ভব হতো না যদি না কৃষি, উদ্যান, প্রাণীসম্পদ, ট্রেডা, মৎস দপ্তরের সমান সহযোগিতা না থাকতো।

ত্রিপুরা সরকারের বায়োটেকনোলজি দপ্তরের অন্যতম সফল একটি প্রকল্প হচ্ছে বায়ো ভিলেজ। এ প্রকল্পটি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় দপ্তর দ্বিতীয় ধাপে বায়ো-ভিলেজ ২.০ প্রকল্প চালু করে। প্রকল্পের সাফল্য ত্রিপুরা রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে গোটা ভারতে ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার মন কি বাত অনুষ্ঠানে বায়ো-ভিলেজ ২.০ প্রকল্পের প্রশংসা করেছেন। প্রদেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখে এ প্রকল্পের প্রশংসা শুনার পর সবার নজর এখন একে ঘিরে। এরপর এ প্রকল্প নিয়ে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে শুরু হয়েছে সফলতার চর্চা।

প্রকল্পের সাফল্যের বিষয় নিয়ে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে কথা হয় বায়োটেকনোলজি দপ্তরের সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার অঞ্জন সেনগুপ্তের সঙ্গে। কারণ এ প্রকল্প প্রথম তার মাথায় এসেছিল। দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটির তারিফ করেছেন।

অঞ্জন সেনগুপ্তে বলেন, বায়ো-ভিলেজ ২.০ প্রথাগত বায়ো-ভিলেজ ভাবনার থেকে ভিন্ন। এক্ষেত্রে জৈব চাষই প্রকল্পের একমাত্র উপাদান নয় বরং অন্যতম উপাদান। এ প্রকল্পের উপাদানগুলোর চয়ন ক্ষমতা সূম্পর্ণ সুবিধাভোগীর হাতে এবং প্রত্যেকটি উপাদান একটি অন্যটির পরিপূরক ও অন্যটির উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। নিৰ্দিষ্ট পাড়া বা গ্রামের সব পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং মহিলা সুবিধাভোগীর অংশগ্রহণে আর্থিক আয়ের ব্যাপারটি সুনিশ্চিত করা যায়, প্রকল্পের  সে চেষ্টাও আছে।

উপাদান তালিকার মধ্যে বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী এল. ই. ডি বাল্ব, টিউব, ফ্যান, মাশরুম চাষে সহায়তা, বায়োগ্যাস ইউনিট, জৈব চাষের জন্য সার, জৈব উপকরণ, মাছের পোনা, খাদ্য ও ওষুধ, উন্নত প্রজাতির হাঁস, মুরগি, শুকুর বা ছাগল, মৌ চাষে চাহিদা ভিত্তিক সহায়তা ছাড়াও প্রশিক্ষণ এবং এককালিন আর্থিক সহায়তা বিশেষ উল্লখেযোগ্য।

তিনি বলেন, এ প্রকল্পে কিছু উপাদান ব্যায় সাশ্রয়কারী আবার কিছু উপাদান অতিরিক্ত আয় সুনিশ্চিত করে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী লাইট, ফ্যান, বায়োগ্যাস, সোলার পাম্প ব্যয় সাশ্রয়কারী উপাদান। এ প্রকল্পে উপাদানের তালিকা চূড়ান্ত করার আগে বায়টেক দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা গ্রামের প্রাকৃতিক সম্পদ ও অন্যান্য সম্পদের নিরীক্ষণের কাজ সম্পন্ন করে। এ প্রকল্প প্রত্যেকটি পরিবারের জন্য অতিরিক্ত আয়ের পথ সুনিশ্চিত থাকে। তবে আয়ের তারতম্য হয় পরিবারগুলোর অংশ গ্রহণের পদ্ধতির ওপর।

অঞ্জন সেনগুপ্ত আরও বলেন, একেকটি বায়ো-ভিলেজের সঙ্গে অন্য বায়ো-ভিলেজের উপাদানগত তারতম্য হয় সেই গ্রামের মানুষের ইচ্ছা, আগ্রহ, এবং প্রকৃতির সম্পদের বিশ্লেষণের নিরিখে। সার্বিকভাবে এ বায়ো-ভিলেজ ২.০ একটি অভিনব প্রয়াস এবং একই সঙ্গে বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ ও  আৰ্থসামাজিক উন্নতির একটি বিকল্প পথের দিশা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২২
এসসিএন/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।