ঢাকা: বিদায়ী- ২০১৩ পঞ্জিকা বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক মুনাফা করেছে ১৭৮ কোটি টাকা। আর বছর শেষে ব্যাংকটির শ্রেণীকৃত ঋণ কমে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৪২ শতাংশ।
সূত্র জানিয়েছে, বছরের শুরু থেকে নানা আলোচনা-সমালোচনার মাঝে থেকেও ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সময়োপযোগী নেতৃত্ব এবং একইসঙ্গে অর্থমন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ধীরে ধীরে শ্রেণীকৃত ঋনের রাহুমুক্ত হচ্ছে বেসিক ব্যাংক।
ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির শ্রেণীকৃত ঋণের হার কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১২ দশমিক ৪২ শতাংশে। রাষ্ট্রায়ত্ত এই বিশেষায়িত ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব প্রতিবেদনে বিভিন্ন আর্থিক সূচকের উন্নতিতে একটি শক্তিশালী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনেক বৈশিষ্ট্যই ফুটে উঠেছে।
জানা যায়, ২০১৩ সালে ব্যবসায় বান্ধব পরিস্থিতির অনুপস্থিতিতে অন্যান্য সকল ব্যাংকের মত বেসিক ব্যাংকের ও শ্রেণীকৃত ঋণের হার আরো কিছুটা বেড়ে যায়। তবে বছরের শেষপ্রান্তে এসে ব্যাংকটি আর্থিক সকল সূচকেই অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে।
ব্যাংকের সূত্রগুলো বলছে, বছরের মাঝামাঝি অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করতে হলেও, ব্যবস্থাপনা ও কর্মী বাহিনীর নিরলস পরিশ্রমে সমঝোতা স্মারকের পর হতেই ব্যাংকটি ধীরে ধীরে ভালো করতে থাকে। বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পরিচালনা পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের জোর প্রচেষ্টার ফলে ডিসেম্বর, ২০১৩ প্রান্তিকে ব্যাংকটির শ্রেণীকৃত ঋণের হার কমে দাঁড়ায় মাত্র ১২ দশমিক ৪২ শতাংশ। ব্যাংকের এই সফলতার পেছনে সময়োপযোগী আদায় প্রচেষ্টা, আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের ভূমিকাও ছিল অন্যতম।
ইতিপূর্বে ব্যাংকটি শক্তিশালী টাস্কফোর্স এর মাধ্যমে আদায় প্রক্রিয়ার তদারকি করলেও সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী আঞ্চলিক রিকভারি সেল গঠনের মাধ্যমে তাদের এই তদারকি প্রক্রিয়া আরো একধাপ এগিয়ে নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৩ সালে ব্যাংকের আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা বা ৫২ দশমিক ৫০ শতাংশ। অন্যদিকে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ২ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা বা ২১ শতাংশ। একই সময়ে নতুন ব্যবসায় বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আরোপিত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ছিল ১৭৮ কোটি টাকা। উক্ত বিধিনিষেধের ফলে সৃষ্ট অলস আমানতের বিকল্প ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে প্রতিনিয়তই কলমানি মার্কেটে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়।
ব্যাংকটির কর্মকর্তারা বলছেন, বছরের শেষ কর্মদিবসে ব্যাংকটির ঋণ আমানত ছিল মাত্র ৭৬ শতাংশ। দেশের আমদানি রফতানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনা করা ছাড়াও কৃষি ঋণের বিতরণেও ব্যাংকটি তার সুনাম বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
ব্যাংকিং সেবাকে সর্বসাধারণের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে শাখা সম্প্রসারণের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ২০১৩ সালে ছয়টি নতুন শাখা খোলা হয়েছে। শতভাগ রাষ্ট্র মালিকানাধীন এ ব্যাংকটির মোট ৬৮টি শাখার ২২টি গ্রামীণ আর বাকী ৪৬টি শহর অঞ্চলে অবস্থিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, ০২ জানুয়ারি, ২০১৪
সম্পাদনা: কবির হোসেন, নিউজরুম এডিটর