ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় ইতালি পাঠানোর নামে দেড়শো যুবকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন বিয়ানীবাজারের লাউতা ইউনিয়নের জলঢুপ পাহাড়িয়াবহর এলাকার শফায়ত আলীর ছেলে।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর ২টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তুলে ধরেন ক্ষতিগ্রস্তরা। ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের আদিনাবাদ গ্রামের শিক্ষক ছয়ফুল আলমের ছেলে জামিল আহমদ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় বৈধভাবে ইউরোপের দেশ ইতালিতে যাওয়ার লক্ষ্যে ২০২৩ সালের বিভিন্ন সময়ে তারা ৬ মাসের চুক্তিতে দেলোয়ার হোসেনের কাছে পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। দেলোয়ার ও তার পরিবারের সদস্যদের হাতে নগদ, চেকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জনপ্রতি ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে দেন। কিন্তু চুক্তিপত্রে নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও এখনও ভিসা বা টাকা কোনোটাই দেওয়া হয়নি তাদের। এ নিয়ে লাউতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন তারা।
জামিল আহমদ বলেন, নানা বাহানায় কালক্ষেপণের একপর্যায়ে টাকা না দেওয়ার জন্য দেলোয়ার নিজের রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে তাদের অনেককে হুমকি দেন। ভয়-ভীতি দেখিয়ে অনেককে চুপ করিয়ে দিয়েছেন। শুধুমাত্র রুবেল আহমদ নামের একজনের সঙ্গে আপস করে সাড়ে ১১ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। পরবর্তীতে সকল পাওনাদার মিলে দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দেলোয়ার আওয়ামী লীগের দোসর সাজিয়ে তাদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন।
তিনি আরো জানান, দেলোয়ার হোসেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তৎকালীন সময় বেশ প্রভাবশালী ছিলেন। তাদের অনেকেই তাকে বিশ্বাস করে সহায়-সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা দিয়েছেন। কিন্তু দেলোয়ার তাদের বিশ্বাস ভঙ্গ করে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে টাকা আটকে রেখেছেন। ফলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে দেলোয়ার সিলেটসহ বিভিন্ন জায়গায় কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
জামিল আহমদ বলেন, আমরা আমাদের পাওনা টাকা ফেরত চাই। নইলে আমাদের আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।
সংবাদ সম্মেলনে জামিল আহমদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিয়ানীবাজারের চারখাই এলাকার মোরাদ আহমদ, উপজেলার পূর্ব দেওরাইল এলাকার মামুনুর রশিদ, শ্রীধরার তানিম আহমদ, আলীপুর গ্রামের সামাদ আহমদ, বড়লেখা দক্ষিণ ভাগ এলাকার মো. আব্দুস শহীদ, উপজেলার বোয়ালি গ্রামের খালেদ আহমদ, দাশের বাজার এলাকার সুজিত চন্দ্র ঘোষ, গোলাপগঞ্জ উপজেলার আমকোনা এলাকার সাহেল আহমদ এবং জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর এলাকার আব্দুল হাকিম।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।
এনইউ/এমজে