দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলোকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
তিনি বলেছেন, এসব ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং দেশের স্থিতিশীলতা ও অর্থনীতিকে নড়বড়ে করার উদ্দেশ্যে এগুলো সাজানো চক্রান্ত।
রংপুর নগরীর একটি হোটেলে রোববার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দলের জেলা ও উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন সারজিস।
সারজিস আলম বলেন, “আমরা বাংলাদেশে লাস্ট কয়েকদিনে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা দেখতে পাচ্ছি। এই ঘটনাগুলো কিছু কালপিটের চক্রান্তের বা ষড়যন্ত্রের অংশ? কারণটা হচ্ছে, এই ঘটনাগুলো এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে ঘটছে, যেই জায়গাগুলো একটা দেশের স্থিতিশীলতার সঙ্গে, অর্থনীতির সঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণভাবে সম্পর্কিত। এবং এটা যখন সিরিজ আকারে প্রত্যেকদিনই একাধিক জায়গায় করা হয়, এবং এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যেই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এগুলো হওয়ার কথা নয় বা পূর্বে এগুলোর ইতিহাস দেখা যায়নি।
সারজিস আলম আরও বলেন, এই ফ্যাসিস্টদের তোষামদকারীদের, দোসরদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি, তারা এখন বিভিন্নভাবে ওই তাদের বিভিন্ন অডিও-ভিডিও কলে যুক্ত হয়ে, নির্দেশনা পেয়ে এই কাজগুলো করছেন। এই জায়গায় গুরুত্বপূর্ণভাবে তদন্ত করা উচিত। এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুশীল মনোভাব, দয়াপ্রবণ মনোভাব থেকে বের হয়ে যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে গতকালকে এয়ারপোর্টে যে ঘটনা ঘটেছে, হাজার হাজার পরিবারকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। তাহলে একজনের প্রতি সুশীলতা প্রদর্শন করে হাজারের অধিক পরিবারের প্রতি আমরা অন্যায় করতে পারি না। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে একটু শক্ত এবং দৃঢ়ভাবে ব্যবস্থা নিতে দেখতে চাই। তাহলে নির্বাচনকালীন সময়ে তাদের প্রতি রাজনৈতিক দল এবং জনগণের একটা আস্থা তৈরি হবে। ”
জুলাই সনদ নিয়ে সারজিস আলম বলেন, আমাদের জায়গা থেকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বলেন, অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের জায়গায় কাজ করা কিংবা মাঠের সহযোদ্ধা হিসেবে বলেন, সাধারণ মানুষ হিসেবে বলেন, আমরা জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা চাই। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ক্রাইটেরিয়া।
দ্বিতীয়ত, আমরা আমাদের জায়গা থেকে দৃশ্যমান বিচার চাই। খুব স্বাভাবিকভাবে সব মামলার সব আসামির দৃশ্যমান বিচার ফেব্রুয়ারির মতো হয়ে যাবে এটাও প্রাসঙ্গিক নয়। কিন্তু যারা এই খুনগুলোর সঙ্গে সরাসরি নির্দেশদাতা বা জড়িত, আমরা ওইরকম যারা প্রথম সারির, তাদের দৃশ্যমান আমরা তাদের রায় এবং কার্যকরিতা দেখতে চাই, ওই রায়ের।
জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন প্রসঙ্গে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘আমরা মনে করি যে এনসিপি তাদের জায়গা থেকে যদি প্রয়োজন হয় এককভাবে নির্বাচন করবে। যদি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই কমিটমেন্টে আসা যায় যে ওই রাজনৈতিক দল এই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে জুলাই সনদের প্রতিটি চাওয়াকে বাস্তবায়ন করার জন্য জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে প্রায়োরিটি দিয়ে আগামীতে কাজ করবে, তাহলে ওই দলের সঙ্গে এনসিপির অ্যালায়েন্স হতে পারে। এখনো হয়নি, আলোচনা চলছে। ’
শাপলা প্রতীক চাওয়া প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, ‘এনসিপি তাদের জায়গা থেকে শাপলা প্রতীকের বিষয়ে অনড়। কোনো আইনগত বাধা না থাকা সত্ত্বেও যদি এখানে নির্বাচন কমিশন তাদের স্বৈরাচারী আচরণ প্রদর্শন করে, স্বেচ্ছাচারিতা করে এবং কোনো প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে এনসিপির এই যৌক্তিক চাওয়াটাকে তারা মূল্যায়ন না করে, আমরা আমাদের জায়গা থেকে রাজনৈতিকভাবে রাজপথে যাব। ’
আরএ