ব্যাকহ্যান্ড শটে চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট পেয়েই শরীরটা কোর্টের সঙ্গে এলিয়ে দিলেন কোকো গফ। দুই হাত দিয়ে মুখটা ঢেকেই পানি বের হয়ে এলো চোখ দিয়ে।
তবে অবিশ্বাসের ঘোরে চেপে ছিলেন না আরিনা সাবালেঙ্কা। দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যামের জন্য আরও অপেক্ষায় থাকতে হলো এই বেলারুশ কন্যা। ফাইনালে প্রথম সেটে বেশ দাপটই দেখান। কিন্তু এরপর কেবলই গফের গল্প। দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-৬, ৬-৩, ৬-২ গেমে উঁচিয়ে ধরেন নিজের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা। শুধু তা-ই নয়, সেরেনা উইলিয়ামসের (১৯৯৯) পর প্রথম টিনেজার হিসেবে ইউএস ওপেন জিতলেন ১৯ বছর বয়সী এই কন্যা।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে গ্র্যান্ড স্ল্যামে অভিষেক হয় গফের। মূলত এরপর থেকেই আলোচনায় উঠে এসেছেন তিনি। তার ভেতর সম্ভাবনাময় তারকার ছাপ খুঁজে পান টেনিস পণ্ডিতেরা। কেউ কেউ আবার সেরেনার উত্তরসূরি হিসেবেও মনে করেন। ইউএস ওপেন জেতার পর গফ ইঙ্গিত দিলেন তিনি ভুল পথে হাঁটছেন না। যদিও নিজেকে সেরেনার সমতুল্য ভাবেন না যুক্তরাষ্ট্রের এই তারকা।
গফ বলেন, ‘সেরেনা সেরেনাই। তিনি সর্বকালের সেরা। আশা করি, তিনি যা করেছেন তার অর্ধেকটা করতে পারব আমি। ’
ইউএস ওপেন জেতার আগে গফের সেরা সাফল্য ছিল গত বছর ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনাল। ঘরের মাঠে নিজের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার পর তাকে নিয়ে অভিনন্দনে ডালা সাজিয়ে বসেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা, কিংবদন্তি বক্সার মাইক টাইসনসহ আরও অনেকেই।
ফাইনাল জয়ের পর স্তব্ধ হয়ে গফ বলেন, ‘আমি এ মুহূর্তে কিছুটা বাকরুদ্ধ। আমার মনে হচ্ছে, সৃষ্টিকর্তা আমাকে কষ্টের ভেতর দিয়ে এটি দিয়েছেন। হয়তো অর্জনটাকে আরও মধুর করার জন্য। আমি কৃতজ্ঞ। এই অনুভূতি ব্যক্ত করার কোনো ভাষা নেই। ’
‘আমি যখন আমার বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম। আমি তার মুখ দেখিনি। কারণ, তিনি আমাকে জড়িয়ে ছিলেন। তবে আমি তার কান্নার শব্দ শুনতে পেয়েছি। আমি কখনো মানুষটিকে কাঁদতে দেখিনি। আর আমার মা, আমি জানতাম আমি হারি কিংবা জিতি তিনি কাঁদবেনই। আমি সারাক্ষণই নিজেকে বলছিলাম, হে সৃষ্টিকর্তা এটা কি আসলেই সত্যি?’
ইউএস ওপেন জিতে র্যাংকিংয়ের তিনে উঠে আসবেন গফ। হারলেও সাবালেঙ্কা সান্ত্বনা পেতে পারেন এটা ভেবে যে, আগামী সপ্তাহেই র্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থানে বসতে যাচ্ছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
এএইচএস