তিনি অভিযোগ করেছেন, আসামে জাতীয় নাগরিকত্ব নিবন্ধন (এনসিআর) তৈরির নামে আসলে ‘বাঙালি হটাও’ অভিযান শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।
ক্ষমতাসীন বিজেপির সমালোচনায় মুখর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, আসামে এটা কী ধরনের রাজনীতি শুরু করেছে সরকার? কমপক্ষে এক কোটি নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।
‘এটা আর কিছুই নয়, বাঙালি হটানোর অভিযান। আসামে বসবাসরত বাঙালিদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত চলছে,’ অভিযোগ করেন তিনি।
এ জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকারকে দায়ী করে মমতা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় যে কোনো রাজ্যের মানুষ দেশের যে কোনো রাজ্যে থাকতে বা কাজ করতে পারেন। অন্য রাজ্যের প্রচুর মানুষ পশ্চিমবাংলায় থাকেন। অনেক বাঙালিও ভিন রাজ্যে আছেন।
‘আসাম ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কিছু লোকজন নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির জন্যই এটা করছে। ’
ভোটার তালিকা থেকে বাঙালি মুসলিমদের নাম বাদ পড়ায় ক্ষুব্ধ মমতা কেন্দ্রীয় সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, বাঙালিদের ওপর এ ধরনের অত্যাচার তৃণমূল কংগ্রেস সহ্য করবে না। আসামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে, এর প্রভাব এ রাজ্যেও পড়বে। আমরা সীমান্ত বন্ধ করে দিতে পারি না।
বিজেপি সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে দলীয় নেতাদের আন্দোলনে নামার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি।
২০১২ সালে আসামে দাঙ্গার উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, সেসময় আসাম থেকে অনেক অধিবাসী এ রাজ্যে পালিয়ে এসেছেন। আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কোচবিহারে ৫০টি শিবির করে তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করেছি।
‘আসামে বাঙালিদের ওপর হামলা হলে, আমরা মুখে কুলুপ এঁটে থাকব না। ’
কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত। আসামে বাঙালি খেদানোর চেষ্টা চলছে। যদি তাই হয়, দেশজুড়ে উত্তেজনা তৈরি হবে। উত্তেজনায় ইন্ধন দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আগুন নিয়ে খেলবেন না। বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ করুন।
সম্প্রতি আসামে বৈধ নাগরিকত্বের প্রথম খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে জায়গা পাননি রাজ্যের সংসদ সদস্য এবং বিধায়কের অনেকের।
জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসীদের নাম থাকলেও নাগরিকত্ব তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (এআইইউডিএফ) সংসদ সদস্য বদরুদ্দিন আজমল এবং রাধেশ্যাম বিশ্বাস৷ নাম নেই বদরুদ্দিনের ছেলে ও ভাইয়েরও৷
২৯ লাখ আবেদনকারীর মধ্যে নাগরিকত্বের প্রথম খসড়া তালিকায় স্থান পেয়েছেন ১ কোটি ৯০ লাখ। বাদ যাওয়াদের মধ্যে বাঙালি ও মুসলিমদের সংখ্যাই বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৮
এমএ