ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাক প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে ২১ মিনিট নিরবতা পালন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৮
বাক প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে ২১ মিনিট নিরবতা পালন ২১ মিনিট নিরবতা পালন করা হচ্ছে

পাবনা: বাক প্রতিবন্ধীদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে ২১ মিনিট নিরবতা পালনের ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্য দিয়ে পাবনায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল বাজারে স্থানীয় একটি যুব সংগঠন ‘জেনওয়াইজেড হানডিয়াল’ নামের একটি সংগঠন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণে এবং বাংলা ভাষার বিকৃতি ও অবমূল্যায়নের প্রতিবাদে এ আয়োজন বলে জানান আয়োজকরা।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় বিভিন্ন বয়সের ২১ জন বাক প্রতিবন্ধি নারী পুরুষের মুখোমুখি ২১ জন স্ববাক মানুষ ২১ মিনিট নিরবে মুখোমুখি বসে থেকে তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছেন।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে অংশ নেওয়া ফরিদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আশরাফুল কবির বলেন, সাদা চোখে খুব সাধারণ মনে হলেও ছোট এ আয়োজনের আসাধারণ দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। মাত্র ২১ মিনিট নিরবে বসে থাকতে আমার নাভিশ্বাস উঠেছিল, সত্যিই খুবই কষ্টের। সমাজ জীবনে ভাষার কতটা প্রয়োজন এই নির্বাক মানুষদের সঙ্গে মুখোমুখি বসে আজ তা উপলব্ধি করলাম।

উপস্থিত স্থানীয় দৈনিক আমাদের বড়াল পত্রিকার সম্পাদক হেলালুর রহমান জুয়েল বলেন, ১৯৫২ সালে মাতৃভাষার জন্যে বীরেরা আত্মাহুতি দিলেও স্যাটেলাইট আর প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের অজুহাতে আমরা প্রতিনিয়ত বাংলা ভাষাকে বিকৃত করে নিজেদেরই অপমান করছি। এতো ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত ভাষাকে অপমান করার ধৃষ্টতা দেখালেও এর কোনো প্রতিকার নেই। তিনি পৃথিবীর সব ভাষাভাষি মানুষের মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধার দাবি জানান।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা গোলজার হোসেন জানান, আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে এ ধরনের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

অনুষ্ঠানের আয়োজক ও যুব প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির বলেন, বাক প্রতিবন্ধীদের কষ্টকে অনুধাবন করতে এবং বাংলা ভাষার প্রতি এ প্রজন্মকে শ্রদ্ধাশীল করতে আজকের এ আয়োজন। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ২১ জন নির্বাক মানুষের প্রতি সহমর্মিতা হাজারো মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে। এ ধরনের আয়োজন সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ মুক্ত একটি প্রজন্ম গড়ে উঠবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।  

এদিকে, সারাদেশের মতো একুশের প্রথম প্রহরে পাবনার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের পূষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কর্মসূচি। পরে জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটিকে ঘিরে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।