ভারত সরকারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইন (এনআইডি) প্যাকেট ও ট্যাগ তৈরি করেছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিভাগের অতিরিক্ত অধিকর্তা ড. দীপক কুমার বৈদ্য।
তিনি জানান, গুজরাট রাজ্যের আমেদাবাদ শহরের এনআইডি সংস্থাটি ফলমূল ও অন্য পণ্যের গুণগতমান বজায় রাখার বিষয়সহ কী করে পণ্যটিকে আরও আকর্ষণীয় করা যায় এসব দিক বিবেচনা করে প্যাকেট ডিজাইন করে থাকে।
এ প্যাকেজিংয়ের সুবিধা কী বা এর জন্য ত্রিপুরার আনারস বাড়তি কোনো সুবিধা পাবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে দীপক কুমার বৈদ্য জানান, ত্রিপুরা রাজ্যে আনারস ভৌগলিক সনদ (জিওগ্রাফিকাল আইডেন্টিফিকেশন) পেয়েছে। বর্তমানে রাজ্যের আনারস দেশের গণ্ডি পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজারে পৌঁছে গেছে এবং স্বাদের জন্য তা মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। যখন অন্য দেশের বাজারের ফুড চেইন বা বড় বড় দোকানে আনারস রাখা হবে তখন খুব সহজেই মানুষ প্যাকেট দেখে বুঝতে পারবে যে এটি ত্রিপুরার সুস্বাদু আনারস। একই রকমের প্যাকেট হওয়ার কারণে যেসব দেশে যাবে, সে জায়গাতেই মানুষ ত্রিপুরা রাজ্যের আনারসকে অন্য সবদেশের আনারস থেকে সহজেই চিহ্নিত করতে পারবে। এর ফলে অন্য দেশের আনারসের সঙ্গে ত্রিপুরার আনারস গুলিয়ে ফেলার বিষয়টি আর থাকবে না। এর আগে ত্রিপুরা রাজ্যের আনারসের লোগো তৈরি করা হয়েছে। এখন যারা ত্রিপুরা রাজ্যের আনারসকে প্যাকেটের মধ্যে ভরে বিক্রি করবেন তাদের বাধ্যতামূলকভাবে ত্রিপুরার আনারসের লোগোসহ সরকার নির্ধারিত প্যাকেট ব্যবহার করতে হবে।
তিনি আরও জানান, এ বছর ত্রিপুরার ক্যুইন ও কিউ প্রজাতির আনারস বিক্রির জন্য দফতর বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছিল। আনারস রফতানির বিষয়ে গত বছরের তুলনায় যাতে আরও বেশি এ বছর রফতানি করা যায় এ নিয়েও পরিকল্পনা করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে এসব পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত হয়ে গেছে। অন্য রাজ্যের ও বিদেশের ক্রেতারা এ বছর আনারস কেনার জন্য এখনো ত্রিপুরায় আসেনি। অন্য রাজ্যের ও দেশের বিভিন্ন বাজারের ক্রেতারা আনারস কিনলে তবেই চাষিদের বাড়তি রোজগার সম্ভব। কিন্তু এখন অন্য জায়গার ব্যবসায়ীরা ত্রিপুরা থেকে আনারস নিয়ে যাওয়ার জন্য যোগাযোগ করতে পারছেন না করোনা ভাইরাসের বৈষয়িক সমস্যার কারণে।
তবে স্থানীয় বাজারগুলোতে আনারসের বিক্রি ভালোই চলছে বলেও জানান দীপক কুমার বৈদ্য। শুধুমাত্র রাজধানী আগরতলা প্যারাডাইস চৌমুহনী এলাকায় প্রতিদিন গড়ে তিন টন আনারস বিক্রি হচ্ছে বলে উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিভাগের কাছে তথ্য রয়েছে। এ আনারসগুলো রাজধানীর আগরতলা ও তার আশপাশ এলাকার লোকজন কিনছেন। গত বছর এ বিক্রি আরও একটু বেশি ছিল। কারণ তখন রাজ্যের অন্য প্রান্ত থেকে লোকজন আসতেন। কিন্তু এ বছর লোকজনের চলাচল কম থাকায় বিক্রি কিছুটা কমেছে। তবে এভাবে বিক্রি করলেও আনারস চাষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫১ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২০
এসসিএন/আরবি/