লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে চলতি মৌসুমে ইলিশ ধরা পড়েনি। মাছ ধরাই একমাত্র পেশা হওয়ায় তাদের আয়-উপার্জন ছিলো বন্ধ।
জেলার রামগতি রায়পুর কমলনগর ও সদর উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার জেলের বসবাস। মেঘনায় মাছ শিকারই তাদের জীবিকা। বিকল্প আয়ের পথ নেই। যে কারণে বছরের অন্য সব দিনের মতো কেটে যাবে তাদের ঈদের দিন। গেলো বছরগুলোতে পশু কোরবানি না দিতে পারলেও ভিন্ন আয়োজনে ছিলো জেলে পরিবারের ঈদ। তবে এবার ভাগ্যে তাও নেই। বর্তমানে আর্থিক সংকট, দুশ্চিন্তা আর মহাজনের ঋণের বোঝায় হতাশ এখানকার হাজার হাজার জেলে। ওদের আকাশে ঈদের চাঁদ নেই। দুঃখ আর চাপা কষ্টে কেটে যাবে তাদের ঈদ।
রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার ও বালুরচর, কমলনগরের ফলকন, কালকিনি সাহেবেরহাট ও রায়পুরের চর কাছিয়ার জেলে পল্লীর খোঁজ খবর নিলে এমনই চিত্র উঠে আসে।
জানা গেছে, মেঘনাপাড়ের জেলেরা দস্যু আর প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায়ই মুখোমুখি হয়। তবুও সংগ্রামী জীবনে বেঁচে থাকর অবিরাম চেষ্টা তাদের। দু’বেলা খেতে পারলেই স্বস্তি। বছরের দুই/একটা দিনকে ঘিরে তারা আলদা স্বপ্ন বুনে। সে স্বপ্নও কখনো কখনো মেঘে ঢেকে যায়। তেমনই ঘটলো এ ঈদুল আজহায়।
মেঘনারপাড়ের জেলেরা জানায়, এ বছর নদীতে ইলিশের আকাল ছিল। পূর্ণিমায় জোয়ারে নদীতে মাছ আসবে, কিন্তু মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে গেছে। নদীতে মাছ শিকারে যাওয়া যাবে না। এতে তাদের পরিবারে দুর্দিন নেমে এসেছে। তারা আরও জানায় ইলিশ শিকার করে সারা বছরের ভরণ-পোষণ চলে।
কিন্তু এবার নদীতে মাছ না পাওয়ায় বেশিরভাগ জেলেদের অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটবে। জেলেদের জন্য ভিজিডি’র চালের যে বরাদ্দ আসে তাও সঠিকভাবে পায় না তারা। দুনীর্তি ও স্বজনপ্রীতিতে বিলি বণ্টন হয় এমটাই এখানকার জেলেদের অভিযোগ।
কমলনগরের চরকালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মেহেদী হাসান লিটন জানান, ভিজিডি’র চাল বরাদ্দ তুলনায় জেলেদের সংখ্যা অনেক বেশি। যে কারণে অনেক জেলে এ সুবিধা পায়না।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মহিব উল্যাহ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও নদীতে ডুবো চরের কারণে ইলিশের বিচরণ কমে গেছে। যে কারণে জেলেদের জালে ইলিশ কম ধরা পড়ে। আশ্বিসের ভরা পূর্ণিমায়সহ ১৫ দিন ইলিশের ভরা প্রজনন হিসেবে ধরা হয়েছে। ওই সবদিন মাছ ধরা বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে। প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরতে না পারায় জেলেদের জন্য ভিজিডি’র সুবিধা থাকছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫
পিসি/