ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

উপকূল থেকে উপকূল

উপকূল থেকে উপকূল

সাগরে ছুটছেন জেলেরা, ফিরছেন শুন্য হাতে

সুমন সিকদার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৬
সাগরে ছুটছেন জেলেরা, ফিরছেন শুন্য হাতে ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বরগুনা: ইলিশের মৌসুমে রুপালী ইলিশের সন্ধানে সাগরে ছুটছেন বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বাগেরহাটসহ উপকূলের জেলেরা। কিন্তু  নদ-নদী ও সাগরে হন্যে হয়ে ঘুরেও ফিরতে হচ্ছে শুন্য হাতে।

জ্যৈষ্ঠ থেকে আশ্বিন পর্যন্ত চার মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু মৌসুমের প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও সাগর আর নদীতে ইলিশ না পাওয়ায় দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন জেলেরা। ইলিশের ভরা মৌসুমেও জেলেদের জালে মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ। বরগুনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদী ও সাগরে হাজার হাজার জেলে প্রতিদিন জাল ফেললেও হতাশ হয়ে ফিরছেন তীরে।

বরগুনা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, পিরোজপুরসহ উপকূলীয় জেলেদের জীবিকা চলে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ শিকার করে। গভীর বঙ্গোপসাগর ও সাগর মোহনা ছাড়াও বরগুনার বিষখালী, পায়রা, বলেশ্বর, সুন্দরবন সংলগ্ন পশুর, শিবশা, কাজিবাছা, বলেশ্বর, ভোলা, পারসিয়াসহ বিভিন্ন নদীতে ইলিশ ধরতে জাল ফেলছেন জেলেরা। কোন কোন স্থানে মাঝে মধ্যে কিছু ইলিশের দেখা মিললেও অধিকাংশ সময়ই ফিরতে হচ্ছে শুন্য হাতে।

এ বছরও যদি ইলিশের মৌসুমে ইলিশ না পাওয়া যায় তবে পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে জেলে পরিবারগুলোকে। তাই ইলিশ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করা এসব জেলেদের জীবন কাটছে এক অজানা আশঙ্কায়।

বরগুনা সদর উপজেলার নলী মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি আবদুস সোবাহান বাংলানিউজকে জানান, তিন বার তারা প্রস্তুতি নিয়ে সাগরে গিয়েছেন কিন্তু কোন বারই মাছের সন্ধান পাননি। যেতে খরচ হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। মাছ বিক্রি করেছেন মাত্র সাড়ে ৬ হাজার টাকা।

আরেক জেলে মোস্তফা হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, কবে যে মাছ অইবো আর দুইটা পয়সা লইয়া ঘরে যাইতে পারুম কইতে পারি না? তয় গাঙ্গে মাছ না পাইলে মোগো দুখের শ্যাষ থাকবে না।
 
সাগর ও উপকূলীয় নদ-নদীতে ইলিশের দেখা না পাওয়ায় লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়ে জেলেদের নদীতে ইলিশ শিকারে পাঠানো আড়ৎদার ও মহাজনদের চোখে মুখে এখন হতাশার ছাপ। এভাবে অব্যাহতভাবে সাগরে মাছ না পাওয়া গেলে এবছর দাদনের টাকা উঠবে কি না তা নিয়ে শংশয়ে আছেন আড়তৎদাররা।

বরগুনা মাছ বাজারের আড়ৎদার রাজিব মাঝি বাংলানিউজকে বলেন, এবছর যদি ইলিশের দেখা না পাই তাহলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। গতবছরও যে হারে ক্ষতি হয়েছে এবছরও যদি সেই এক অবস্থা হয় তাহলে ব্যবসা করার চেয়ে না করাই ভালো। ধার দেনা করে এবছর দাদন দিয়েছি দাদনের টাকা উঠবে কি না কে জানে?

ইলিশের মৌসুম শুরু হলে ইলিশ না পরার বিষয়ে বরগুনা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলফাজ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ইলিশ পরা না পরা প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। তবে প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী ধারণা করা হচ্ছে, মাছ না পরার প্রধান কারণ আষাঢ় মাসে এখনো বৃষ্টি হয়নি। আষাঢ়ের ঘনবৃষ্টি শুরু হলে উপকূলীয় নদ-নদীতে ইলিশের আনাগোনা বৃদ্ধি পেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।