ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

উপকূল থেকে উপকূল

উপক‍ূল থেকে উপকূল

টিউবওয়েল-পুকুর নেই, নদীর পানিই ভরসা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৪ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৬
টিউবওয়েল-পুকুর নেই, নদীর পানিই ভরসা ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

উপকূল ঘুরে (ভোলা): মেঘনার তীর ঘেঁষা জেলে পল্লী, এখানে ৩ শতাধিক পরিবারের বসবাস, এ এলাকায় কোনো টিউবওয়েল বা পুকুর নেই। এক কিলোমিটার দূরে যাও বা একটি টিউবওয়েল রয়েছে, তাও মাঝে মধ্যে নষ্ট থাকে।

এক কলস পানির জন্য অনেক কষ্ট করে নারীদের পায়ে হেঁটে দূরে যেতে হয়। সেখানেও লম্বা লাইন। কখনও আবার পানির অভাবে নদীর পানিই পান করতে হয়। রান্না-বান্না, নাওয়া-খাওয়ার জন্য নদীর পানিই একমাত্র ভরসা তাদের।

এতে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে। এভাবে ৮ বছর ধরে পানি সংকটে রয়েছেন তারা।

এ চিত্র ভোলা সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের স্লুইসঘাট এলাকার। একই চিত্র দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের কালিয়া গ্রামের জেলে পল্লীর। এ দুই গ্রামে পানির সমস্যা তীব্র। যাদের এক কলস পানির জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়।

ধনিয়া ইউনিয়নের স্লুইসঘাট থেকে পন্ডিত বাড়ির দরজা, বাঁধের পুরো এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জেলে পল্লী। এছাড়া নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ভীটেহারা পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে বাঁধের উপর। এ বাঁধ এলাকার হাজরো মানুষ পানির সংকটে ভুগছেন। পানির সমস্যা দূর করতে প্রতিটি ঘরেই রয়েছে ৩/৪টি করে কলস। একই সঙ্গে পানি তুলে সংরক্ষণ করেন তারা।
 
জেলে বধূ তানিয়া বলেন, অনেক দূরে টিউবওয়েল হওয়ায় পানি আনতে বিভিন্ন ধরনের‘ সমস্যায় পড়তে হয়, মাঝে মাঝে বখাটেদের উৎপাতের শিকারও হতে হয়।

মজিবুল হক বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে পানি আনতে নারীদের বেশি সমস্যা, মাঝে মধ্যে যদিও বাড়ির পুরুষরা এতে সহযোগিতা করেন।

গৃহবধূ মুক্তা বলেন, আধা কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী মসজিদে একটি টিউবওয়েল থাকলেও সেখানে লম্বা লাইন থাকে। অন্যদিকে পন্ডিত বাড়ির দরজায় টিউবওয়েল মাঝে মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। তখন নদীর পানিই পান করতে হয়। এতে ডায়রিয়া লেগেই থাকে।

অন্যদিকে, দৌলতখানের ভবানীপুরের ১, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে কালিয়া গ্রাম। পুরো গ্রামেই রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। সেখানে অবশ্য সেনিটেশন ব্যবস্থাও নেই। নেই স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াত। ফলে বহুমুখী সংকট লেগেই রয়েছে তাদের।

অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে বসবাস জেলে পল্লীর মানুষদের। আধুনিক সভ্যতার বিন্দুমাত্র ছোঁয়া লাগেনি এ পল্লীতে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও কোনো খোঁজ-খবর রাখেনা বলেও অভিযোগ তাদের।

কালিয়া গ্রামের জেলে বধূ হোসনে আরা বলেন, আমাদের এখানে টিউবওয়েল নেই তাই নদীর পানি পান করতে হয়। একটি পুকুরও নেই যেখানে মহিলারা গোসল করতে পারে।

জেলে মাইনুদ্দিনের স্ত্রী হাসনা বলেন, আমাদের এক কলস পানি আনতে বহু দূর যেতে হয়, দিনের বেলায় পানি আনলেও রাতে খুব কষ্ট করতে হয়।

কালুর স্ত্রী লাইজু ও গৃহবধূ সামসুনাহার বলেন, দূরে একটি টিউবওয়েল রয়েছে তাও মাঝে মধ্যে নষ্ট থাকে তখন নদীর পানি ছাড়া উপায় থাকে। অনেক সময় ঝড়-তুফান হলে পানির কষ্ট পেতে হয়।

এছাড়াও আমাদের পল্লীতে রাস্তাঘাট কিছুই নেই, লেট্রিন নেই, আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মনির বলেন, এখানে পানির সমস্যা তীব্র, এ এলাকার জন্য কমপক্ষে ৩/৪টি টিউবওয়েল প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।