ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উপকূল থেকে উপকূল

উপকূল থেকে উপকূল

কলোনিতে উঠবে না ঈদের চাঁদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৫ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৬
কলোনিতে উঠবে না ঈদের চাঁদ

লক্ষ্মীপুর: একাধিকবার নদী ভাঙনে ওরা নিঃস্ব। সব হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন কলোনিতে।

ফের ভাঙন। ঈদের তিনদিন আগে বিলীন হয়ে গেছে কলোনির রাস্তা। এখন চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তাও নেই। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৫ শতাধিক মানুষ।

উঠানে পানি, তীব্র জোয়ারে ঘরেও হয় হাঁটু পানি। দুর্ভোগের শেষ নেই। ধেয়ে আসছে মেঘনা, আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে ওদের। তাই আসন্ন ঈদে কলোনিতে উঠবে না ঈদের চাঁদ।
 
এমনই পরিস্থিতিতে রয়েছেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার সাহেবেরহাট  ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কলোনির ৫০ পরিবারের প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ। তাদের মধ্যে নেই ঈদ আনন্দ, আছে শুধু বেঁচে থাকার আকুতি।

স্থানীয় সাহেবেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাস্টার আবুল খায়ের ২০১৩ সালে ব্যক্তিগত তিন একর জমিতে সরকারি সহযোগিতায় কলোনি গড়ে তোলেন। এতে অসহায় ৫০ পরিবার আশ্রয় নেন।

চেয়ারম্যানের জমিতে ও তার প্রচেষ্টায় কলোনি গড়ে উঠায় এটি স্থানীয়দের কাছে চেয়ারম্যান কলোনি হিসেবে পরিচিত। ভাঙন কবলিত জগবন্ধু, মাতাব্বরনগর, আজু বেপারির হাট এলাকায় বসতভিটা হারা অসহায় মানুষ এ কলোনিতে আশ্রয় নিয়েছেন। ফের ভাঙন তাড়া করছে তাদের।

সারা বছর ধরে কমলনগরের মেঘনার ভাঙন অব্যাহত থাকে। বর্ষায় ভাঙন ভয়াবহ রূপ নেয়। রোববারের (০৩ জুলাই) ভাঙনে চেয়ারম্যান কলোনির চলাচলের রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় জোয়ার এলেই কলোনি প্লাবিত হয়। বসতঘরে ঢোকে পানি। নেই চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে দুর্ভোগের যেনো শেষ নেই। চরম কষ্টে আছেন ওই এলাকার শিশু ও বৃদ্ধরা।

মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন ধেয়ে আসছে। এভাবে অব্যাহত ভাঙতে থাকলে আগামি দু’ সপ্তাহের মধ্যে কলোনি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কলোনিতে এখন চলছে ভাঙন আতঙ্ক। চরম হাতাশায় রয়েছেন এখানকার বাসিন্দারা। আসন্ন ঈদ নিয়ে তাদের উৎসাহ নেই। নেই ঈদ ভাবনা, ঈদ আনন্দ। এখন তারা শুধু খুঁজে বেড়াচ্ছেন বেঁচে থাকার ঠিকানা।

কলোনির বাসিন্দা আলেয়া বেগম বলেন, কলোনির রাস্তা নদীতে ভেঙে গেছে। এখন জোয়ার এলেই ঘরে পানি ঢোকে। জোয়ারের পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। তাই ঈদের কথা আমরা ভুলে গেছি।  

কলোনির বাসিন্দা নুরুল ইসলাম, পারুল বেগম ও জসিম বলেন, ফসলি জমি, ঘর-বাড়ি সব হারিয়ে কলোনিতে আশ্রয় নিয়েছি। এখন কলোনিও ভেঙে গেলে কোথায় যাবো। কে দিবে আশ্রয়?
 
স্থানীয় সাহেবেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাস্টার আবুল খায়ের বলেন, রাস্তা নদী গর্ভে চলে গেছে, কলোনিও ভাঙনের মুখে। এখানকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। ঈদ উপলক্ষে অসহায় প্রতি পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।