কালাম সর্দার বলেন, আমাদের এতোই দুর্ভাগ্য যে ঈদেও ছেলে-মেয়েদের কোন জামা-কাপড় কিতে দিতে পারিনি। কোরবানির মাংস জুটবে না।
নাগরিক স্বাভাবিক জীবন থেকে আলাদা মানতা সম্প্রদায়ের জীবনের চিত্র এমনই। ঈদ এলেও যেন ঈদের ছোঁয়া লাগেনি তাদের জীবনে।
সারাদিন জাল বেয়ে যে মাছ পায় তা দিয়ে পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে পারে না তারা।
ঠিকানাহারা এসব মানুষের কোরবানি দেয়া তো দূরের কথা, ছেলে-মেয়েদের নতুন জামা কাপড় কিনে দেয়ার সামর্থও নেই।
ভোলা সদরের কাচিয়ার কাঠির মাথা, ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতলী এবং রাজাপুর ইউনিয়নের জোড়া খাল নামক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শত শত নৌকার বহর মানতাদের। ছেলে-মেয়ে আর পরিবার-পরিজন নিয়ে নৌকায় বসে আছে সবাই। চোখ-মুখে চিন্তার ছাপ।
নৌকার মধ্যেই কয়েকজন নারীকে দেখা গেলো, রান্না-বান্না করতে। কেউ আবার জাল বুনছে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা নদীর তীরে খেলা করছে। তাদের শরীরে জড়ানো পুরাতন ছেঁড়া জামা-কাপড়।
মানতাদের সাথে কথা বলে জানা গেলো, এভাবেই বছরের পর পর বছর নদীতে বসবাস করে আসছে ঠিকানাহারা নৌকাভাসি মানতা সম্প্রদায়। ঝড়-জলোচ্ছ্বাস আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে লড়াই করে পানিতে ভাসমান জীবন পাড়ি দিচ্ছে।
মানতা বহরের সর্দার সহর আলী বলেন, ঈদের নতুন জামা কাপড় না পেয়ে কান্না করছে ছেলে-মেয়েরা। আমাদের কোন সামর্থ নেই।
ইউনুস বলেন, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। কিন্তু কাউকে কিছু কিনে দিতে পারিনি।
মানতা বধূ হাসিনা বলেন, ৫ ছেলে নিয়ে বহু কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। কোরবানি দেয়ার সামর্থ নেই। নদীতেও মাছ নেই। তাই ভালো খাবার জুটছে না।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো: সেলিম উদ্দিন বলেন, মানতাদের স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় তাদের সহযোগিতা করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে স্থায়ী বাসিন্দা হলেই তাদের ভিজিডির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব। আমরা চেষ্টা করছি তাদের সহযোগিতা করার।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৭
জেডএম/