সিডরের পরও বার বার হানা দিয়েছে আইলা, নার্গিস, গিরিসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এসব দুর্যোগ ছাড়াও সারা বছরই নিরাপত্তাহীনতা ও শঙ্কায় ভুগছেন নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধরা।
উপকূলবাসী জানান, অধিকাংশ এলাকায় বাঁধ না থাকায় অমাবস্যা-পূর্ণিমায় জোয়ারের লবণ পানি ঢুকে তাদের ফসল ও অন্য সম্পদ নষ্ট করছে। এর ওপরে সিডরের পর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের মেরামত করা হলেও এখনো প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ রয়ে গেছে। সংস্কার হওয়া বাঁধেরও উচ্চতা কম হওয়ায় এসব স্থান দিয়ে জোয়ারের পানি উপচে বার বার প্লাবিত হচ্ছে লোকালয়।
এতে মানুষের জীবনের নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষি ও মৎস্য নির্ভর এ অঞ্চলের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম। পুরো উপকূলে বাঁধ নির্মাণ ও ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের দ্রুত সংস্কার না হলে অর্থনীতি পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদেরও।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বয়ে যায় স্মরণকালের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ সিডর। আধা ঘণ্টার তাণ্ডবে লণ্ড-ভণ্ড হয় উপকূল। এরপরের জলোচ্ছ্বাসে অপেক্ষাকৃত নিচু বাঁধ উপচে ও বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রবল তোড়ে পানি ঢুকে মুহুর্তে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় বিস্তীর্ণ জনপদ। এতে বরগুনা জেলায় প্রাণ হারান এক হাজার ৫০১ জন মানুষ, গৃহহীন হয় ৮৯ হাজার ৭৮৫টি পরিবার। সিডরে এতো বেশি ক্ষয়-ক্ষতির মূল কারণ ছিল, বাঁধভাঙা প্লাবন।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবদুল হান্নান প্রধান বাংলানিউজকে জানান, জেলার ২২টি পোল্ডারের ৯০০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মধ্যে সিডরের জলোচ্ছ্বাসে ৫৪ কিলোমিটার সম্পূর্ণ ও ৩৯৬ কিলোমিটার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিম্নচাপের প্রভাবে তালতলী উপজেলার তেতুলবাড়িয়াসহ কিছু স্থানের বেড়িবাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ এখনো পুনর্নির্মিত হয়নি। শিগগিরই এসব বেড়িবাঁধ মেরামত করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৭
এএসআর
** উপকূলে এখনও সিডরের ক্ষতচিহ্ন
** প্রিয়জনের ফেরার প্রতীক্ষায় ১০ বছর