গত দু’দিনে জোয়ারের পানিতে পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের চরলাঠিমারা গ্রামে রিংবাঁধ ভেঙে মাছের ঘেরসহ ৪শ’ ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। মাছের ঘের তলিয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে বিষখালী নদী সংলগ্ন রিংবাঁধবাসীদের চিত্র। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অভিভাবকের মধ্যে এসমাইল, আইউব আলী, নূর আলম, আউয়াল, পনু মিয়া, আলী আহমেদসহ অনেকে জানান, চরলাঠিমার বেড়িবাধেঁর বাইরে প্রায় ৪শ’ পরিবার ২৫ বছর ধরে বসবাস করছে। তারা সবাই জেলে হওয়ায় এখানে বসবাসের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিরাপত্তার জন্য হরিণঘাটা জঙ্গলের পাশ দিয়ে সরকারিভাবে রিংবাঁধ নির্মাণ করা হয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সাগরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জোয়ারের পানিতে দীর্ঘদিনের পুরোনো বাঁধটি ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়।
গভীর রাতে লোকজন ঘুমিয়ে থাকায় হঠাৎ করে প্লাবিত হওয়ায় তারা ছুটাছুটি করে নিরাপদে আশ্রয় নিলেও ঘরের ভেতরের কোনো মালামাল সরাতে পারেনি। তাছাড়া এসমাইলের বাড়ির সামনে দিয়ে রিংবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তার ঘরবাড়ি নদীতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে, শতাধিক হাঁস মুরগিও মারা গেছে। অনেকের মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মাছের ঘের মালিক পনু মিয়া, নূর আলম বাংলানিউজকে জানান, রিংবাঁধ ভেঙে ছোট-বড় অর্ধ শতাধিক মাছের ঘের তলিয়ে বিভিন্ন ধরনের মাছ ভেসে গেছে। তারা দাবি করেন ৪৭টি ঘের তলিয়ে মালিকদের ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো তাদের বন্যা সুরা রিংবাঁধটি সংস্কারের জন্য দাবি জানান।
এ ঘটনায় সরেজমিন পরিদর্শন করেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন ও সদর পাথরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান।
পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, জোয়ারে রিংবাঁধ ভেঙে সবার ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। কারও ঘরে চুলা জ্বালানোর মতো অবস্থা নেই। অনেকে অর্ধাহারে অনাহারে আছেন।
পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভাটা হলেই রিংবাঁধটি মেরামত করা হবে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৮
এসআরএস/আরএ