ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৭ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘মৃগী রোগের চিকিৎসায় ঝাড়-ফুঁক নয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
‘মৃগী রোগের চিকিৎসায় ঝাড়-ফুঁক নয়’ ...

চট্টগ্রাম: মৃগী রোগের জন্য বৈদ্য-কবিরাজের ঝাড়ফুঁকের মতো অপচিকিৎসার আশ্রয় না নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।  

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের (চমেক) নিউ কনফারেন্স হ‌লে বিশ্ব মৃগী রোগ দিবস উপল‌ক্ষে আ‌য়ো‌জিত সেমিনারে নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান এই আহ্বান জানিয়েছেন।

 

নিউরোলজি বিভাগ এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনার শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা চমেক হাসপাতালের আশপাশের সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নিউরোলজি বিভাগের সামনে এসে শেষ হয়।

 

সেমিনারে ‘মৃগী রোগের সা‌থে বসবাস’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউরোল‌জি বিভা‌গের সহ‌যোগী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ‌্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামা‌নের সভাপ‌তি‌ত্বে ও রেজিস্ট্রার ডা. সামী এম আদনানের সঞ্চালনায় সে‌মিনা‌রে প্রধান অ‌তি‌থি ছি‌লেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন।  

উপস্থিত ছিলেন নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শিউলি মজুমদার, অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কায়স্থগীর, অধ্যাপক ডা. পঞ্চানন দাশ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহিতুল ইসলাম, ডা. মসীহুজ্জামান আলফা, ডা. মো. তৌহিদুর রহমান, ডা. মো. সালাউদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল কিবরিয়া, ডা. জামান আহমেদ, ডা. একরামুল আজম, ডা. হুমায়ুন কবির, ডা. শামসুল আলম, ডা. নাঈমা মাসরুরা, ডা. প্রিয়তোষ দাশ, ডা. বেলাল হোসেন।  

সে‌মিনা‌রের সা‌র্বিক তত্ত্বাবধানে ছি‌লেন রে‌জিস্ট্রার ডা. মো.  রিফাত কামাল ও ডা. মুবিনুল হক চৌধুরী। উপ‌স্থিত ছি‌লেন ডা. সৈয়দ আরিফ উদ্দীন, ডা. মো. ওসমান, ডা. কামরুল হাসান প্রমুখ।

সে‌মিনা‌রে বক্তারা ব‌লেন, মৃগী রোগের চিকিৎসায় ঝাড়-ফুঁক নয়, অন্য সাধারণ রোগের মতো সঠিক চিকিৎসায় মৃগী রোগীও সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারে। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে মৃগীরোগের উপসর্গ অন্য কোনো রোগের উপসর্গ হিসেবেও দেখা দিতে পারে। তাই পরিবারের কারও মৃগী রোগের উপসর্গ দেখা দিলে বৈদ্য কিংবা কবিরাজের অপচিকিৎসা না নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

মৃগী স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতাজনিত রোগ। সাধারণত, মস্তিষ্কের কোষগুলো একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে সচল রাখে। কোনো কারণে মানবদেহের কার্য পরিচালনাকারী মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের উদ্দীপক ও নিবৃত্তিকারক অংশদ্বয়ের কার্যপ্রণালির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলে মৃগীরোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যখন এ ধরনের হাজার থেকে লক্ষাধিক বৈদ্যুতিক শক্তি একই সময়ে ঘটে এবং যা মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি করে, তার ফলাফল হতে পারে খিঁচুনি।

সুস্থ–স্বাভাবিক একজন ব্যক্তি যদি হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে কাঁপুনি বা খিঁচুনির শিকার হন, চোখ-মুখ উল্টে ফেলে কিংবা কোনো শিশুর চোখের পাতা স্থির হয়ে যায়, একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকে অথবা মানসিকভাবে সুস্থ কোনো ব্যক্তি যদি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন, তবে তাকে মৃগীরোগী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

মৃগীরোগ হওয়ার সুনির্দিষ্ট কারণ নেই। তবে কিছু কারণে মৃগীরোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন: জন্মের আগে বা জন্মের সময় বা পরে মস্তিষ্কে আঘাত, মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাব, মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে প্রতিবন্ধকতা (স্ট্রোক বা অন্যান্য সমস্যা), মস্তিষ্কের টিউমার, মস্তিষ্কে প্রদাহ, পুষ্টির অভাব, অধিক মাত্রার জ্বর। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মৃগীরোগ জেনেটিক প্রবণতা দ্বারা সৃষ্ট। উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রথম পর্যায়ের আত্মীয়দের মৃগীরোগের ঝুঁকি দুই থেকে চার গুণ বেড়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।