ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

নতুন বছর নিয়ে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
নতুন বছর নিয়ে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

শাবিপ্রবি (সিলেট): পাওয়া-না পাওয়া, সুখ-দুঃখ আর স্মৃতিগুলোকে পেছনে রেখে নতুন দিগন্তের আশা-স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকে মানুষ। নতুন দিনের আগমনে নতুন করে গন্তব্য খোঁজে প্রতিটি মানুষ।

বাইশের (২০২২) বিদায়ীতে সে হতাশা ও বঞ্চনাকে ছাপিয়ে মনকে প্রফুল্ল করে তুলতে ক্যালেন্ডারের নতুন পাতা উল্টিয়ে একসঙ্গে উচ্চারিত হয় ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’। সেই ভাবনায় পিছিয়ে নেই তরুণরাও।  নতুন এ বছর নিয়ে আশা-প্রত্যাশা, চিন্তা-ভাবনা ও পরিকল্পনার কথা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

নতুন পরিসংখ্যানে নতুন বছর, তেইশ মানে দায়িত্ব নেওয়ার বয়স
নতুন বছরের আগমনী শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় স্পিকার্স ক্লাবের সভাপতি মো. আমান বলেন, তেইশের শুভাগমনে নতুনত্বের সুঘ্রাণ বইছে চারিদিকে। ৩৬৫ দিন পেরিয়ে আবারও নতুন বছরের আগমন। স্মৃতির অ্যালবামে যুক্ত হলো পূর্ণ একটি বছর। এবার শুরু হবে নতুন পরিসংখ্যানে নতুন বছর। নতুনত্বের উজ্জ্বল সৌন্দর্যকে বরণ করে নেওয়ার মানসিক উচ্ছ্বাস সবার মাঝে। তেইশ হলো দায়িত্ব নেওয়ার বয়স। যৌবনের দ্বীপ্ত আলোকরশ্মির পূর্ণ আঁচলে দায়িত্ব নিতে হয় এই বয়সে। তেইশের তারুণ্যের হাত ধরে নতুন বছরের আগমন সবার জন্য সুখকর হোক। সকল বিভেদ-আঁধার মিলিয়ে নতুন বছর উজ্জ্বল ও ভালোবাসার হয়ে উঠুক তেইশের তারুণ্যের মতো।

সংগঠনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থীর মানসিক উন্নতি, যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক সময়ে নিজেকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখতে একটা সংগঠনের সাথে যুক্ত হওয়া আবশ্যক। এই লক্ষ্যে আগামী নতুন বছরে আরও কিছু নতুনত্ব নিয়ে বছরব্যাপী নিরলসভাবে কাজ করে যাবে শাহজালাল ইউনিভার্সিটি স্পিকার্স ক্লাব। নতুন বছর আমাদের পুরনো সব কোলাহল মুছে দিয়ে সজীবতার বার্তা নিয়ে আসুক- সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

যুদ্ধ বিধ্বস্ত বিশ্বে শান্তির পতাকা উত্তোলিত হোক
লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আশরাফুল আলম বলেন, বিগত বছরের নানান সমস্যা আর গ্লানি পেছনে ফেলে নতুন করে সাজ-সজ্জায় সজ্জিত হোক এ বছর। নতুন বছরে সকলের জন্য কল্যাণ এবং মঙ্গল বয়ে নিয়ে আসুক। যুদ্ধ বিধ্বস্ত সারা বিশ্বে সকল দেশে শান্তির পতাকা উত্তোলিত হোক নতুন বছরে। বিশ্ব অর্থনীতি, রাজনীতি আবার তার পূর্বের গতিতে ফিরে যাক। নতুন বছর আমাদের বাংলাদেশের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা-গবেষণা, রাজনীতি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ প্রাপ্তিতে নব সম্ভাবনা বয়ে নিয়ে আসুক। আমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষিতরা যোগ্যতা অনুযায়ী দেশে সেবা করার সুযোগ লাভ করুক। নতুন বছর হোক আমাদের দেশের জন্য আশীর্বাদ সরূপ। দেশ ভালো থাকুক, দেশের মানুষ ভালো থাকুক। বাংলাদেশ হোক এক অপার শান্তির দেশ।

ভার্চুয়াল জগৎ থেকে বের হয়ে আসতে হবে
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আফসারা হোসেন হিমা বলেন, গাছের নতুন পাতার মতো নতুন বছর সবার জীবনে নতুন এক সজীব উদ্দীপনা নিয়ে আসুক। নিজের জীবনের নির্দিষ্ট সময়কে নতুন করে নতুন রূপে গড়ে তোলার এক প্রয়াস হয়ে উঠুক নতুন বছর। বর্তমান সময়ে তরুণদের মধ্যে বেশিরভাগই রাত জাগে এবং দেরিতে ঘুম থেকে উঠতে অভ্যস্ত। সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়া এবং নেতিবাচকতার মধ্য দিয়ে আমাদের সময় কাটে। তাই ভার্চুয়াল জগৎ থেকে বের হয়ে প্রকৃতির সতেজ পরিবেশে যাওয়া উচিত।

নতুন হলো উদ্যম ও উদ্দীপনার প্রতীক
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কিনের সভাপতি মো. ইফরাতুল হাসান রাহীম জানান, নতুন হলো উদ্যমের প্রতীক, উদ্দীপনার প্রতীক। আমাদের জীবনে নতুন কিছু আসলে আমরা স্বভাবতই উদ্দীপ্ত হই। নতুন বছরও তেমনই একটা ঘটনা। নতুন বছরে সকলের প্রতি শুভকামনা। নতুন বছরে প্রত্যাশা থাকবে, সমাজের কোনো স্তরের মানুষই তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না। যে মানুষগুলো বাকীদের চেয়ে পিছিয়ে আছে, তাদের প্রতি সমাজের এগিয়ে থাকা মানুষরা কর্তব্য বিবেচনা করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে, সুন্দর এক মানবিক সমাজ বিনির্মাণ করবে এটাই কাম্য। সকল ভেদাভেদ ভুলে নিজেদের মানুষ পরিচয়টাই বড় হয়ে উঠবে- এটাই হোক নতুন বছরের অঙ্গীকার।

অতীতের ভুলগুলো শুধরে নতুন করে বাঁচতে হবে
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্নোত্থানের প্রচার সম্পাদক আবু রায়হান বলেন, সুখ-দুঃখের হাজারো স্মৃতির মধ্যে দিয়ে বিদায় নিচ্ছে ২০২২ সাল। পুরাতনকে পাল্টে জায়গা করে নিলো নতুন ক্যালেন্ডার। অতীতের সকল ভুলগুলো শুধরে নতুন করে বাঁচার প্রত্যয় নিয়ে নতুন বর্ষবরণে মেতে উঠছে সারা বিশ্ব। নতুন বছর সকলের জীবনে নিয়ে আসুক সুখ, সমৃদ্ধি এবং সাফল্য।

লক্ষ্য-অর্জনগুলো সহজতর হয়ে উঠুক
সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মুআজ মোহাম্মদ আব্দুল করিম বলেন, প্রত্যেক নতুন বছরের শুরুটা হয় নতুন আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা নিয়ে। এর মধ্যে হয়তো চাওয়া-পাওয়ার খানিকটা পূরণ হয়, আবার কিছুটা অপূর্ণই থেকে যায়। তবে কি কি হয়ে ওঠে নাই সেগুলো ভেবে তো আর থেমে থাকা যায় না! প্রত্যেকবার নিত্যনতুন চিন্তাধারা আর আশা-আকাঙ্ক্ষা এসে ভর করে। এইবারেও গতবারের ব্যতিক্রম নয়! এই বছরে আমার চাওয়াগুলোর মধ্যে একটি হল- আমার পরিচিত-অপরিচিত মানুষদের সুন্দর আশাগুলো পূরণ হোক এবং তাদের সময়গুলো ভালো কাটুক। আরেকটি আমার লক্ষ্য-অর্জন আরও সহজতর হয়ে উঠুক।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।