ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

অ্যাটেনডেন্সের বিনিময়ে ছাত্রলীগের মিছিলে পাঠাতেন ইবি শিক্ষক হাফিজ

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২৪
অ্যাটেনডেন্সের বিনিময়ে ছাত্রলীগের মিছিলে পাঠাতেন ইবি শিক্ষক হাফিজ

ইবি: অ্যাটেনডেন্সের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের মিছিলে পাঠানো, ক্লাসের শিডিউল দিয়ে ডেকে এনে জোরপূর্বক জন্মদিন পালন করা, ব্যক্তিগত রুমে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন ও ছাত্রীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করাসহ নানা গুরুতর অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে।  

সোমবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে তাকে চাকরিচ্যুত ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে তালা ঝুলিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা ফটক অবরোধ করে রাখেন। এসময় কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহগামী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বাসগুলো আটকা পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতের শর্তে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান ও পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলীর আশ্বাসে গেট খুলে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা উপাচার্যের সঙ্গে তাদের প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করেন। এসময় উপাচার্য তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়।

বিভাগের ছাত্রী মৌমিতা তাসনিয়া রহমান জানান, হাফিজ স্যার আমাদের ফেসবুক ঘাঁটাঘাঁটি করেন। সেখান থেকে বিভিন্ন স্ক্রিনশট নেন, আবার ক্লাসে সেগুলো নিয়ে বাজেভাবে অপমান করেন। তিনি আমাদের বলেন- তোমরা ফেসবুকে ছবি দেও কেন? কাস্টমার ধরার জন্য? তিনি আমাদের এক বান্ধবীর তথ্য আরেক বান্ধবীর থেকে নেন। সময় অসময় মেসেজ দেন। বিভাগের তথ্য পাওয়ার জন্য স্পাই রাখে প্রতিটি ব্যাচে।

আরেক শিক্ষার্থী লামিয়া হোসেন জানান, আমি প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতাম। আমি কি পোশাক পড়বো, কোথায় যাবো, কি খাবো, সেই স্বাধীনতাটুকু তিনি কেড়ে নিয়েছিলেন। দুইদিন বিভাগে না যাওয়ায় আমাকে উল্টা করে ঝুলিয়ে পিটাতে চেয়েছিলেন। বিভাগের মেয়েদের ওপেনে গালিগালাজ করেন। তিনি মেয়েদের অশ্লীল ভাষায় সম্বোধন করেন। যে স্যারের গুণগান গাইবে সে ইন্টার্নালে পাবে ২৭ আর আমি পাবো ১৭। আমার বন্ধুদের রাতের বেলা ডেকে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে বদনাম করা হয়।

আরেক শিক্ষার্থী হৃদয় জানান, একজন শিক্ষক কখনো অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে মেন্টালি অ্যাটাক করতে পারেন না। কিন্তু তিনি সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে, কোথায় থাকবো, কোথায় আড্ডা দেব, কোন হলে থাকবো, এসব নিয়ে বাড়াবাড়ি করেন। আমাকে হল থেকে নামিয়ে দেন। পরে তার মাধ্যমে হলে ওঠার জন্য বলেন। আমাকে লাল পানি দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।

বিষয়টি নিয়ে সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আতিফা কাফি বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ এখনও পাইনি। উপাচার্য স্যার তদন্ত কমিটির আশ্বাস দিয়েছেন। তদন্ত কমিটি পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, আজ তাদের অভিযোগগুলো শুনেছি। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।