ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) এক ছাত্র লুঙ্গি পরে ক্যাম্পাসে আসায় তাকে শাসানোকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পরই অনুষদ ভবন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত ২৭ আগস্ট লুঙ্গি পরে ক্যাম্পাসে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের হুজ্জাতুল্লাহ ভূঁইয়া। এ ঘটনায় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জহরুল ইসলাম রিংকু তাকে শাসান ও মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন হুজ্জাতুল্লাহ।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৩১ আগস্ট দিবাগত রাতে আগে থেকেই হলের লাইট বন্ধ করে লাঠি-স্ট্যাম্প নিয়ে অপেক্ষা করেন ১২-১৫ জন যুবক। এসময় রিংকুকে জিয়া হলের সামনে একা পেয়ে মারধর করে হলে পালিয়ে যান তারা। রিংকুর অভিযোগ, হুজ্জাতুল্লাহ ও তার বন্ধু আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের আল আমীনসহ বেশ কয়েকজন মিলে তাকে মারধর করেন।
এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর আল আমীনসহ তার বন্ধুদের মারধর করেন রিংকু ও তার বন্ধুরা। এসময় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের রিংকু, হামজা এবং লোক প্রশাসন বিভাগের জামিলসহ আরও কয়েকজন ছিলেন বলে অভিযোগ করেন আল আমীন।
পরে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মজুমদারসহ সিনিয়র কর্মীরা সবাইকে হলে পাঠিয়ে দেন।
এরপর সবাই হলে চলে গেলে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ডাইনিংয়ে খেতে গেলে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিক মারধরের শিকার হন। এসময় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ্র ভৌমিক, অর্ক এবং আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সুমন ছিলেন বলে অভিযোগ করেন আশিক।
এদিকে আশিককে মারধরের ঘটনা জানার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে থেকে তার বন্ধুরা লাঠি, রড, স্ট্যাম্প নিয়ে বের হন। এদিকে জিয়াউর রহমান হলে আল আমীন ও সিনিয়ররাও রড, লাঠি ও স্ট্যাম্প নিয়ে মহড়া দিতে থাকেন। পরে ছাত্রলীগের সিনিয়র কর্মীরা দুই পক্ষকে শান্ত করেন।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, শুনলাম সিনিয়র এবং জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। লুঙ্গি পরার মতো তুচ্ছ বিষয়ে এমন মারামারি খুবই দুঃখজনক। জানার পর বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আজ ক্যাম্পাসে জুমার নামাজ আদায় করলাম। পরে শুনলাম অনুষদ ভবনে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। পরে আমি সহকারী প্রক্টরসহ সিকিউরিটি অফিসারদের জানালাম। এ ঘটনায় আগামীকাল শনিবার ওরা প্রক্টর অফিসে বসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২২
আরএ