ঢাকা: সরকার প্রধানের হাত দিয়েই পৌর নির্বাচনে অনিয়মের সূচনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারি করা প্রজ্ঞাপনের বিধি ১২ তে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, কোনো পৌরসভার মেয়র প্রার্থী পদে একজন মাত্র দলীয় নমিনেশন সাবমিট করতে পারবেন। একাধিক ব্যক্তি দলীয় নমিনেশন সাবমিট করলে সবগুলোই বাতিল হয়ে যাবে।
শরীয়তপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ৩ ডিসেম্বর মনোনয়ন জমা দেন মো রফিকুল ইসলাম। যাচাই বাছাইয়েরর ৭ ডিসেম্বর সেটি বাতিল হয়ে যায়। ওই দিনই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ফারুখ আহমেদ তালুকদার পুনরায় মনোনয়ন জমা দেন-জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী দলীয় প্রার্থীর প্রত্যয়নপত্রে দলের সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষর করবেন। সে অনুযায়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারুখ আহমেদের প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষরকরেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
তিনি (শেখ হাসিনা) শুধু আওয়ামী লীগের সভাপতিই নন; তিনি সরকারের চিফ এক্সিকিউটিভ। সুতরাং আমরা মনে করি সরকার প্রধানের হাত দিয়েই পৌর নির্বাচনে অনিয়মের সূচনা হয়েছে। এ অবস্থায় অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হবে না- বলেন ফখরুল।
এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকেও দায়ী করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের জারি করা প্রজ্ঞাপনের ১২ নং বিধিতে যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে মেয়র পদে একাধিক দলীয় মনোনয়ন জমা পড়লে সবগুলো বাতিল হয়ে যাবে, সেখানে একটি মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর আরেকটি মনোনয়ন গ্রহণ করেন কীভাবে?
শরীয়তপুর ছাড়াও মাগুরা, বরগুনাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করে আওয়ামী লীগের পক্ষে একাধিক মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ফখরুল।
তিনি বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না জেনেও গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। সরকারের সুযোগ ছিল সব রকম প্রভাব থেকে নির্বাচন কমিশনকে মুক্ত করে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার। কিন্তু সরকার সে পথে না হেঁটে তার চিরাচরিত পথেই হাঁটছে।
ফখরুল জানান, যাচাই বাছাইয়ে ফেনী পৌরসভায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর তার পক্ষে আপিল করেন জেলা বিএনপি সভাপতি এডভোকেট আবু তাহের। এই অপরাধে তার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। তার মা ও স্ত্রীকে বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ পৌরসভায় বিএনপি মনোনিত প্রার্থীকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দীন আহমেদ বীরবিক্রম, সেলিমা রহমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মোহম্মদ শাহজাহান, সহ প্রচার সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৫
এজেড/আরআই