ধামরাই: খগেন পাল প্রথমে মৃদু হাসলেন। এরপর খুবই আস্তে, অনেকটা লাজুক ভঙ্গিতে জানালেন ‘ফ্রি খাওয়ানোর বিল টুকটাক পান।
তার কাছে প্রশ্ন ছিল পৌর নির্বাচনে ভোটারদের চা, পান কিংবা সিগারেট খাওয়ানোর জন্য মেয়র বা কাউন্সিলর প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা পান কিনা।
উপরের জবাবের সঙ্গে ধামরাই পৌরসভার ৯ নং ওয়াডের ছোট চন্দ্রাইল গ্রামের হোটেল মালিক খগেন আরো জানান, তবে ফ্রি খাওয়াটা এখনো শুরু হয়নি সেভাবে। দেদারসে চা-পানি খাওয়ার জন্য আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
ধামরাই পৌরসভার নির্বাচনের হালচাল দেখতে শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কথা হচ্ছিল খগেনের সঙ্গে। সবে তখন জমতে শুরু করেছে তার হোটেল।
জানালেন, সন্ধ্যার পর থেকেই জমছে ভোটের আড্ডা। তবে এখনো প্রার্থীরা তেমন খরচাপাতি দেন না। কয়েকদিন পর থেকে এলাকায় এলাকায় ফ্রি চা, বিড়ির ব্যবস্থা হবে বলেও মনে করেন তিনি।
হোটেলের ভেতরে বসেছিলেন সানোয়ার। এ বৃদ্ধ জানালেন তিনি পৌরসভার ভোটার নন। তবে নিয়মিত আসেন এখানে। ভোটের ফ্রি পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, ভোটের চা, পানি এখনো ফ্রি হয় নাই।
পাশের চায়ের দোকানে বসেছিলেন ৬ নং ওয়াডের আমির। বললেন, প্রচারণা চলছে এখন গ্রুপ ভিত্তিক। তবে পরিবেশ শান্তিপূর্ বলে দাবি তার।
তিনি ফ্রি চা-পানি খেয়েছেন কি জানতে চাইলাম। প্রত্যুত্তরে এমনভাবে মাথা নাড়লেও তার উত্তর হা বা না দুটোই ধরে নেওয়া যায়।
এর ঘণ্টা দেড়েক আগে পৌরসভার কায়েতপাড়ায় জহির আলীও বলেছেন, ভোটের চা, পান বিড়ি এখনো ফ্রি হয়নি দোকানে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কিছু কিছু এলাকাতে দেওয়া হচ্ছে কিছু ফ্রি সার্ভিস। কয়েকদিনের মধ্যে তা শুরু হবে পুরোদমে।
এদিকে, যাত্রাবাড়ি এলাকায় ঢুকতেই দেখা মিললো জুতা বগলদাবা করে হেঁটে চলা মঙ্গল মিয়ার। হাতে বিএনপির প্রার্থীর লিফলেট। নিজেকে কর্মী দাবি করে জানালেন, প্রচারণায় গিয়ে জুতার এ বেহাল দশা।
কিছুক্ষণ পর আবির্ভাব ফরহাদ হোসেন, জামিল, আসলাম হোসেন ও শুভ চন্দ্রের। মঙ্গল মিয়ার এ সতীর্থরা জানালেন, ফ্রি চা-পানি তো দূরের কথা। উল্টা গাঁটের পয়সা খরচা করে তার ভোট চেয়ে চেয়ে ফিরছেন।
তাদের দাবি, তাদের মেয়র প্রার্থী মঞ্জুর ভরসা ইমেজ। তা দিয়েই তিনি পুনঃনির্বাচিত হবেন। এর জন্য পয়সা খরচা করে ফ্রি খাওয়ানোর দরকার নেই তাদের।
সন্ধ্যার আগে ঢু মারা হলো, ধামরাই প্রেসক্লাবের পাশের আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর প্রধান ডেরায়। জনাকয়েক কর্মী থাকলেও তারা কথা বলতে রাজি হলেন না, এমনকি ছবিও তুলতে অনীহা তাদের। ভোটের হালচালের প্রশ্নের জবাবে জানালেন, মেয়র প্রাথী গোলাম কবির সন্ধ্যার পর আসবেন এখানে।
ঘুরে দেখা গেলো ধামরাই বাজার, উপজেলা পরিষদ, থানা এলাকা, যাত্রাবাড়ি পোস্টারে পোস্টারে সয়লাব, নির্বাচনের আলোচনাও এখানে-সেখানে হয়, তবুও কেন যেন না প্রাণোচ্ছল না।
কেন জানি মনে খটকা লাগলো, ফ্রি পান, বিড়ি, চা ছাড়া কি তবে ভোটের প্রচার-প্রচারণা তুঙ্গে উঠবে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
এসআর/আরএ
** হিসাব-নিকাশ ‘নীরব’ ভোটারদের হাতে
** নিজের পছন্দে ভোট দিতে চান নারীরা
** ধানের শীষের ভোট আছে, গ্যারান্টি নাই
** নির্বাচনী হাওয়া লাগেনি সাভারে