মানিকগঞ্জ থেকে: বর্তমান মেয়র এলাকার উন্নয়নে কাজ করেননি, কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। দুই যুগ ধরে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও নাগরিক সেবা ও জীবন-মানের কোনো উন্নয়ন হয়নি এখানে।
আক্ষেপ ও ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন মানিকগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা গাজী কামরুল হুদা সেলিম।
‘নারকেল গাছ’ প্রতীক নিয়ে মাঠে থাকা এ প্রার্থীর নির্বাচনী স্লোগান, ‘বদল চাই, বদলে দিন, নিজ অধিকার বুঝে নিন। ’
বিজয়ী হলে মানিকগঞ্জ পৌরসভার খোলস পাল্টে নতুন করে গড়বেন বলেও অঙ্গীকার করলেন নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক দাবিদার আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতা।
মানিকগঞ্জ শহরের পেটের মধ্যে ৩নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গাধরপট্টিতে অনেকটাই গ্রামের আবহ। শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে বাড়িতে ঢুকতেই দেখা মিললো কয়েক কর্মীর। বাড়ির নিচতলাতে ১৫/২০ জন কর্মীদের নিয়ে আলাপ করছিলেন সেলিম।
পরিচয় পেয়ে সময় দিলেন। আলাপকালে আওয়ামী লীগের পরিচয়টা আড়াল করে নিজেকে দাবি করলেন জনতার প্রার্থী হিসেবে।
বললেন, স্থানীয় এ নির্বাচন প্রথমবারের মতো হচ্ছে। দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। কিন্তু জনতার চাপের কারণেই আমি প্রার্থী হয়েছি।
নিজেকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মানতে নারাজ এ নেতা। এমনকি দলের ভোট ভাগ হবে বলেও তিনি মনে করেন না। তিনি বলেন, এলাকার যুবক, তরুণরা তার সঙ্গে রয়েছেন। সাধারণ মানুষের ভালবাসা রয়েছে। তিনি বিজয়ী হবেন বলেই আশা করেন।
প্রচার প্রচারণায় গিয়ে তার কর্মীরা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর থেকে বাধা পাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমবেশি বাধা পাচ্ছি। তবে ভোট সুষ্ঠু হবে। তবে তিনিও স্বীকার করেন নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া ও শান্তিতে ভোট দেওয়া নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মনে সংশয় রয়েছে।
সেলিম জানালেন, তিনি বিজয়ী হলে কি করবেন আগেই তার একটা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। তিনি জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, শিশু পার্ক স্থাপন, হতদরিদ্রদের জন্য পৌরকর মওকুফ, বিনামূল্যে ২৪ ঘণ্টার লাশবাহী গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এবং রাতে রোগী পরিবহনের বিশেষ ব্যবস্থা চালু করবেন।
জনতার প্রার্থী দাবিদার সেলিম আরো জানান, পৌর এলাকার প্রতিবন্ধীদের জন্য তিনি ভাতার ব্যবস্থা করবেন। সম্পূর্ণ না হলেও সর্বনিম্ন অবস্থানে নিয়ে আসবেন মাদকের আগ্রাসন।
তিনি আরো জানান, ঢাকার কাছে হলেও মানিকগঞ্জবাসীর ঢাকা যাতায়াতে, বিশেষ করে রাতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তিনি পৌরসভার উদ্যোগে এসি, নন এসি ও মিনি বাস সার্ভিস চালুর ব্যবস্থা করবেন।
এ মুক্তিযোদ্ধার আরও জানান, তার পক্ষে প্রবল জনমত রয়েছে। দল-মত নির্বিশেষে সবার সমর্থন পাচ্ছেন তিনি। এমনকি প্রচারণায় গিয়ে তার গাটের পয়সা খরচ করতে হচ্ছে না। মানুষের ভালোবাসা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়েই তিনি বিজয়ী হবেন।
আওয়াম লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র রমজান আলী ও বিএনপির মশিউর রহমান যাদুকে শেষ পর্যন্ত তার ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, নিজেকে নিয়ে ভাবছেন তিনি। এবং সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাস রয়েছে তার।
নারকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী সেলিম দাবি করেন, তার দ্বারাই সম্ভব মানিকগঞ্জের চেহারা পাল্টে আধুনিক, সুশৃঙ্খল ও জনবান্ধব পৌর এলাকা গড়ে তোলা।
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
এসএইচ
** এখনো ফ্রি হয়নি ভোটের চা-পানি
** হিসাব-নিকাশ ‘নীরব’ ভোটারদের হাতে
** নিজের পছন্দে ভোট দিতে চান নারীরা
** ধানের শীষের ভোট আছে, গ্যারান্টি নাই
** নির্বাচনী হাওয়া লাগেনি সাভারে