ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

নির্বাচন

খুলনা থেকে মাহমুদ মেনন

চালনায় ভোটের মাঠে নারী, পুরুষরা ধান কাটছে

মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৫
চালনায় ভোটের মাঠে নারী, পুরুষরা ধান কাটছে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চালনা, দাকোপ (খুলনা) থেকে: চালনায় নির্বাচনে নারীরা এগিয়ে। না, ভোটের ফলাফলে নয়, প্রচার প্রচারণায়।

আর প্রার্থীরা নয়, এই এগিয়ে থাকা নারীরা সেখানকার ভোটার। চালনার পথে পথে নারীদের দল বেঁধে প্রচার চালাতে দেখা গেছে।

পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ-প্রধান সড়কে বাংলানিজের দেখা হলো এমনই একটি প্রচার দলের সঙ্গে। জনা বিশেক নারী। কেউ বৃদ্ধা, হাতে লাঠি, কেউ মধ্যবয়সী, কোলে শিশু, কেউ আবার বয়সে তরুণী। সবাই মিলে দল বেঁধে যাচ্ছে প্রচার কাজে। হাতে লিফলেট। যাকে যেখানে পাচ্ছে লিফলেট হাতে তুলে দিয়ে ভোট চাইছে। সত্তরোর্ধ্ব রাবেয়া বেগম, লাঠি হাতে চলছেন সবার আগে আগে। দলের বুঝি তিনিই নেতা। জানালেন, এর আগে আর কোন বছরই, কোনো ভোটেই তিনি ক্যানভাসিংয়ে নামেন নি। এবার কেনো নামলেন, তার উত্তরে বললেন, ম্যালা দিন পর ভোট আসিছে। সবাই বললো চলো, তাই চলি এলাম। ঘরে কাজ নাই। বসি থাকি কী করবো। তাই আলাম।

পাশ থেকে আরেক নারী বললেন, আমাদের ঘরে কাজ আছে। সেগুলো সেরেই এসেছি। আমরা সবার কাছে ভোট চাইতে যাচ্ছি। আমরা মা-বোনদের ভোটকেন্দ্র যাওয়ার জন্য বলছি। আমাদের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য বলছি।

আরেকজন বললেন, আমাগের ভালো লাগে তাই আমরা নামিছি। আমরা আমাগের দেশের উন্নতি চাই। সেই জন্যই যোগ্য প্রার্থীরে ভোট দিবার কচ্ছি। আমাদের ছেলে মেয়েরা স্কুল যাতি পারছে, স্কুল হয়েছে। আগে এত শিক্ষিত ছিল না এখন শিক্ষিত হচ্ছে। নতুন মেয়র আসি আমাদের আরও উন্নতি করবি, সে জন্যিই আমরা ভোটে নামিছি।

চালনা লঞ্চঘাট এলাকায়, বৌমার গাছতলা এলাকায়, রেডস্টার হ্যাচারি এলকায় সব জায়গায়ই নারীদের দেখা গেলো ক্যাম্পেইনে সক্রিয়।
 
বউমার গাছতলায় এক সব্জির দোকানি শিপ্রা বিশ্বাস বললেন, ভোট শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। আর মেয়েরা এখন আর ঘরে বসে নেই। তারাও নেমে পড়ছে ভোটের ক্যাম্পেইনে। ক্যাম্পেইনে গেলে কিছু টাকাও পাওয়া যায়, সে কারণেও অনেকে নামছে বলে মত তার।

তবে, পুরুষদের সংখ্যা এত কম আর নারীরা কেনই এত বেশি ক্যাম্পেইনে তার একটা গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা মিললো সাতরাস্তার মোড়ের গোপালের দোকানের সামনের সাঈদের কাছে। পেশায় ব্যবসায়ী সাঈদের মতে, এখন ধান কাটার মওসুম তাই পুরুষদের অনেকেই সকাল সকাল ধান কাটতে চলে গেছে। তাই ভোটের ময়দানে তাদের উপস্থিতি কম। এ বছর ভোটটা দাকোপসহ গোটা এলাকার জন্য বড়ই অসময় হয়ে গেছে। পুরুষদের প্রায় সবাইকেই মাঠে থাকতে হচ্ছে ধান কেটে বাড়িতে তোলার জন্য। আর সে কারণেই তাদের ঘরের মেয়েরা ক্যাম্পেইনে নেমেছে। ভোটের প্রচারতো আর থেমে থাকতে পারে না।

চালনা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১১ হাজার ভোটার। মেয়র প্রার্থী তিন জন। একজন নৌকা, একজন ধানের শীষ আর অপর জন পেয়েছেন জগ মার্কা। ইনি স্বতন্ত্র দাঁড়িয়েছেন। আর দাকোপের বর্তমান মেয়রও তিনি।

নারীদের অবশ্য নৌকা মার্কার প্রচারেই বেশি দেখা গেলো।
 
এখানে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ভোট লড়াইয়ে লড়াইয়েও শামিল রয়েছেন ৬ জন। যাদের মধ্য প্রতি তিন ওয়ার্ড থেকে একজন করে মোট তিন জন নির্বাচিত হবেন। এই নারী কাউন্সিলরদের পক্ষেও বেশ নারী প্রচারকারীকে মাঠে দেখা গেলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৫
এমএমকে

** চালনায় উচ্ছ্বাস বেশি, ভোটাররাই খোঁজে প্রার্থীদের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।