বগুড়া: বগুড়া পৌরসভায় তিনটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণসহ ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া দু’টি কেন্দ্রে পৌনে এক ঘণ্টার মতো ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র সরেজমিন ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১২টার দিকে ২০নং ওয়ার্ডের নারুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নারুলী উত্তরণ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে পরপর তিনটি শক্তিশালী ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হোসেন আলী নামে এক যুবককে আটক করে। তার পিতার নাম নিজার উদ্দিন সরকার।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রহিম জানান, এ ঘটনায় একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
বেলা সাড়ে ১২টার পর ৭নং ওয়ার্ডের ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দু’টি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে অবিস্ফোরিত একটি ককটেল উদ্ধার করে।
এদিকে ৫নং ওয়ার্ডের আইডিয়াল প্রাইমারি স্কুল কেন্দ্রে সংঘর্ষের কারণে বেলা সাড়ে ১২টা থেকে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখা হয়। কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুর রশীদ বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বেলা দেড়টার দিকে ৮নং ওয়ার্ডের তাপসী রাবেয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কমপক্ষে ২৫টির মতো ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে ৪টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় এই কেন্দ্রে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার মতো ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়।
কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার আজাহার আলী বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৪নং ওয়ার্ডের জুবলী ইনস্টিটিউশন ভোট কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থী সামছুদ্দিন শেখ হেলালের কর্মীরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর এজেন্টদেরকে বের করে দেয়। পাশাপাশি তাদের বসার চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে চলে যায়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এ সময় ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
১৫নং ওয়ার্ডের ছয়পুকুরিয়া বালিকা বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থী আমিনুল ইসলামের কর্মীরা জোরপূর্বক ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করেছে বলে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর লোকজন অভিযোগ করেছেন। তবে এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার শফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করেন।
সকাল ৯টার দিকে ২নং ওয়ার্ডের সরকারি আযিযুল হক পুরাতন ভবন ভোট কেন্দ্রে দুইজন কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় কেন্দ্রের বাহিরে এজেন্টদের বসার বেশ কিছু চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। পরে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
১০নং ওয়ার্ডে ঠনঠনিয়া নুরুন আলানুর ফাযিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে বিজিবি সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এসব ব্যাপারে জানতে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) আরিফুর রহমান মন্ডল ও মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি বি-সার্কেল) গাজিউর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে ফোন রিসিভ না করায় এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৫
এমবিএইচ/আইএ/আরআই