ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন

সহকারী প্রিসাইডিংয়ের স্বাক্ষর ছাড়াই ৪০০ ব্যালটে সিল!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২১
সহকারী প্রিসাইডিংয়ের স্বাক্ষর ছাড়াই ৪০০ ব্যালটে সিল! ...

লক্ষ্মীপুর: দায়িত্বরত সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর ছাড়াই ৪০০ ব্যালট পেপারে সিল মারার ঘটনা ঘটেছে। ওই ব্যালটগুলোতে ফুটবল প্রতীকে সিল মেরে বালট বাক্সে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিলো।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) পদের ব্যালট পেপারে এ সিল মারার ঘটনা ঘটে।  

ওই ওয়ার্ডে সদস্য পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন ফুটবল প্রতীকের কাজী শামছুল ইসলাম সামু।

তার প্রাপ্ত ভোটের ৪০০ ব্যালটে স্বাক্ষর না থাকায় বিজয়ী হওয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সামু ওই ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক।  

অভিযোগ উঠেছে, নির্বাচনের দিন সামু ও তার লোকজন স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট পেপারগুলো নিয়ে ফুটবল প্রতীকে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করেন। সিল মারার ঘটনায় প্রতিবাদ করলে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের ভয়ভীতি দেখায় সামু ও তার লোকজন।

এ ঘটনায় ওই ওয়ার্ডের সদস্য পদে মোরগ প্রতীকের প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী মাহমুদুল হক রাসেল জুডিসিয়ালি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কেরোয়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে কাজী শামছুল ইসলাম সামু ও মাহমুদুল হক রাসেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওইদিন দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জামশেদ কবির বাক্কি বিল্লাহ ও পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট কয়েক সহযোগীকে নিয়ে মানছুরা বালিকা বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে যান। তারা মেম্বার প্রার্থী সামুর পক্ষ নিয়ে জোরপূবর্ক ৪০০ ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে তাতে স্বাক্ষর ছাড়াই ফুটবল প্রতীকে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে রাখেন।

সহকারী প্রিসাইডিং অফিসাররা প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দেওয়া হয়। পরে বিকেলে ভোট গণনা শেষে সামু ৬৩৩ ভোট ও রাসেল ৩৪২ ভোট পেয়েছেন বলে জানানো হয়।

এ বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাহমুদুল হক রাসেল বলেন, ৪০০ ব্যালট নিয়ে ফুটবল প্রতীকে সিল মারা হয়েছে। আমি জুডিসিয়াল তদন্তের দাবি করছি। ব্যালটগুলো পুনরায় গণনা করলে তাতে যে সহকারী প্রিসাইডিংয়ের স্বাক্ষর নেই সেটা প্রমাণ হবে। আমাকে ষড়যন্ত্র করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছি।

অভিযুক্ত শামছুল ইসলাম সামু বাংলানিউজকে বলেন, এটি মিথ্যা অভিযোগ। ভোটকেন্দ্রে সার্বক্ষণিক প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত ছিল। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটানোর সুযোগ নেই। আর আমি বর্তমান মেম্বার। আমি বিগত দিনে এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছি। সেজন্য মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী মাহমুদুল হক রাসেল ভোটে হেরে গিয়ে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।

কেরোয়া মানছুরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার এটিএম খোরশেদ আলম বলেন, ৪০০ ব্যালট তো অনেক। এ বিষয়ে আমি অবগত নয়। ১০-২০টা ব্যালটের পেছনে হয়তো স্বাক্ষর না থাকতে পারে। তবে সহকারী প্রিসাইডিংদের স্বাক্ষর ছাড়া ভোট বৈধ হবে না।

রায়পুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হারুন মোল্লা বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।