উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় ও স্থানীয়রা বাংলানিউজকে জানান, উপজেলার কিসামত চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য একাডেমিক ভবনের সঙ্কট দেখা দেয়। এ সঙ্কট পূরণে চাহিদাভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চার তলার ভিত্তির ওপর দ্বিতল ভবনের পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের প্রকৌশল বিভাগ।
নির্মাণ কাজ শুরু থেকে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে বলে স্থানীয় অভিভাবকরা অভিযোগ করলেও কর্ণপাত করেনি প্রকৌশল বিভাগ। বিশাল ভবন তৈরি করলেও নেই শিক্ষার্থীদের ওয়াশরুম বা টয়লেট নেই। নেই প্রতিবন্ধীদের ওঠার সিঁড়ি। ছাদে পাঁচ ইঞ্চির ঢালাই দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তিন-চার ইঞ্চির ঢালাই দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকৌশলী ছাড়াই দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাই দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত করা হয়েছে। ফলে দ্বিতীয় তলার শেষ কক্ষে ছাদে ফিনিশিং ভালো না হওয়ায় ছাদ হয়েছে ঢেউ খেলানো তিন ইঞ্চির। ফলে ঢেউয়ের এ ফাঁকাস্থান তথা পাঁচ ইঞ্চি পূরণে দেওয়া হচ্ছে নেটসহ দুই ইঞ্চির প্লাস্টার। যা অল্প কিছুদিনের মধ্যে পলেস্তার খুলে শিক্ষার্থীদের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
ঠিকাদার রাজমিস্ত্রী সাইফুল ইসলাম ভবনের ছাদ ঢালাই পরিমাপ করে বলেন, কোথাও চার ইঞ্চি আবার কোথাও একটু কম আছে। তবে দ্বিতীয় তলার শেষ শ্রেণিকক্ষের ছাদে যেটুকু ঘাটতি রয়েছে তা প্লাস্টার করে সমান করে দেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল জলিল বাংলানিউজকে বলেন, শুরু থেকেই কাজের মান নিয়ে প্রকৌশলীদের বলা হলেও তারা কর্ণপাত করেননি। বরং উল্টো ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে গোজামিল দিয়ে আসছেন। ছাদের পাঁচ ইঞ্চির স্থলে তিন ইঞ্চির ঢালাই দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে প্রতিবাদ করলে বাকি দুই ইঞ্চি পূরণে নেট নিয়ে প্লাস্টার করছেন ঠিকাদার। গত তিনদিন ধরে তাড়াহুড়ো করে করা হচ্ছে এ প্লাস্টার।
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিষয়টি দেখতে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
ভবন নির্মাণ কাজের তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা উপ সহকারী প্রকৌশলী (এসও) আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, ঢালাইয়ের দিন ঢাকা থেকে অডিট টিম আসায় এ ভবনে সার্বক্ষনিক থাকতে পারিনি। তবে ছাদ ঢালাই কম-বেশি হতে পারে। নেট দিয়ে প্লাস্টার করে পূরণ করা হলে সমস্যা হবে না। সামান্য ত্রুটি হয়েছে তবে বালিশ দুর্নীতির মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, অনেক কাজ চলমান থাকায় সব কাজ তদারকি করা সম্ভব হয় না। এ ভবনে একটু সমস্যা হয়েছে। তবে মূল ঠিকাদার কাজে না আসায় সাব-ঠিকাদার শাহজামাল কথা শুনতে চান না। প্লাস্টার করলেও সমস্যা হবে না।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর আলী বাংলানিউজকে বলেন, ছাদে প্লাস্টার করার নিয়ম নেই। এমনটি হলে পলেস্তার খুলে শিক্ষার্থীদের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯
এফএম