ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মহাতারকাদের একজন দিয়েগো ম্যারাডোনা চিরবিদায় নিয়েছেন ২০২০ সালে। আর ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে গতকাল পরপারে তার কাছে পৌঁছে গেছেন ফুটবলের 'কালো মানিক' পেলে (৮২)।
খেলোয়াড়ি দিনগুলোতে নানা বিতর্ক সঙ্গী হয়েছিল ম্যারাডোনার। কিন্তু সেসব বিতর্ক পেলের সঙ্গে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী ফরোয়ার্ডের সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারেনি। বরং একে অন্যকে বিশেষ শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখতেন তারা। এমনকি মাঠ মাতানোর সময়টাতে ম্যারাডোনাকে যখন প্রশ্ন করা হয়- কে সর্বকালের সেরা; তিনি নাকি পেলে? উত্তরে তিনি তিনবারের বিশ্বকাপজয়ী পেলের নাম নেন।
পেলের সঙ্গে তুলনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আর্জেন্টিনার ঐতিহাসিক ১০ নম্বর জার্সিধারী ম্যারাডোনা বলেছিলেন, 'না, না, ম্যারাডোনা ম্যারাডোনাই; পেলে সেরাদের সেরা। আমি শুধুই সাধারণ একজন খেলোয়াড়। আমি পেলেকে ছাড়িয়ে যেতে চাই না, সবাই জানে তিনি (পেলে) সর্বকালের সেরা। '
পরিসংখ্যান যা বলে
ফুটবল ক্যারিয়ারে জাতীয় দল এবং ক্লাবের জার্সিতে পেলে ও ম্যারাডোনার শিরোপা সংখ্যা সমান ১৪টি করে। তবে শিরোপার মান বিচার করলে পেলে ঢের এগিয়ে। কারণ একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ (১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০) জেতার স্বাদ পেয়েছেন পেলে।
জাতীয় দলের জার্সিতে পেলে ও ম্যারাডোনার ম্যাচ সংখ্যা প্রায় সমান। আর্জেন্টিনার জার্সিতে ম্যারাডোনা ৯১ ম্যাচে করেছিলেন ৩৪ গোল। আর পেলে ব্রাজিলের জার্সিতে ৯০ ম্যাচে করেছিলেন ৭৭ গোল। ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জেতানোর পর ১৯৯০ বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলেছিলেন; যেখানে জার্মানির কাছে হেরে বিদায় নেয় আলবিসেলেস্তেরা।
দুই প্রজন্মের দুই সেরা ফুটবলারের মধ্যে তুলনা টানা অনুচিত। পেলে ও ম্যারাডোনা নিজেদের মধ্যে তুলনা করতে পছন্দও করতেন না। বরং একসঙ্গে তাদের বিভিন্ন সময় আনন্দে সময় কাটাতে দেখা গেছে। বছর দুয়েক আগে ম্যারাডোনা যখন মৃত্যুবরণ করেন, তখন ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলেন পেলে। বিষণ্ণ মন নিয়ে টুইটারে তিনি লিখেছিলেন, 'আমরা স্বর্গে একদিন একসঙ্গে ফুটবল খেলবো। '
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
এমএইচএম