চট্টগ্রাম: অন্যরকম সুপারশপ। বড় হলরুমে সাজিয়ে রাখা হয়েছে পণ্যসামগ্রী।
চট্টগ্রামের জামালখানে বিদ্যানন্দ আয়োজিত ১০ টাকায় পূজার বাজারের চিত্র এটি।
এ বাজারে ৫০ পয়সা দামে বিক্রি হলো ১ কেজি চাল, ১ কেজি লবণ, ১ কেজি ছোলা, আধা কেজি সুজি, ১২টি কলম-পেন্সিল, ২০০ গ্রাম বিস্কুটের প্যাকেট।
১ টাকায় পেলেন ১টি খাতা। দেড় টাকায় পাওয়া গেল ১ ডজন ডিম, ২ কেজি আটা, ১ কেজি চিনি, মশুর ডাল। ২ টাকায় ৪০০ গ্রাম ওজনের নুডলস, বাচ্চাদের শার্ট, প্যান্ট। ৩ টাকায় ১ লিটার সয়াবিন, ১টি স্কুল ব্যাগ, ১টি লুঙ্গি, ১টি বাচ্চাদের ফ্রক। ৪ টাকায় পাঞ্জাবি, মেয়েদের টুপিস, শাড়ি।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ব্যতিক্রমী এ বাজার উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি এ দেশ ও শহর সব ধর্মের সব গোত্রের, সব দলের। এ শহরকে ক্লিন, গ্রিন, হেলদি, সেফ সিটি করতে চাই। এ শহর হবে সবার জন্য নিরাপদ শহর। সৌহার্দ্যের বন্ধনে, সাম্যের বন্ধনে আমরা একসাথে কাজ করবো। সম্প্রীতির বন্ধনে এ শহরের মানুষগুলো আবদ্ধ থাকব। বিদ্যানন্দ যে আয়োজন করেছে তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই। তারা নতুন নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে কাজ করছে। পরিবেশদূষণমুক্ত শহর করার জন্য প্লাস্টিকের বিনিময়ে রোগী দেখা, চাল-ডাল নিত্যপণ্য দেওয়া, গাছের চারা বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যানন্দ।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড ডিরেক্টর মো. জামাল উদ্দিন বলেন, সম্প্রীতির বার্তা দিতে এ আয়োজন। সুবিধাবঞ্চিতরা আত্মমর্যাদার সঙ্গে যেন আত্মবিশ্বাস পায়। নতুন জামা, শাড়ি, লুঙ্গি, চাল, ডাল, ডিম, স্কুলব্যাগ, খাতা, কলম সুপারশপের মতো সাজিয়ে রেখেছি। নির্দিষ্ট দামে পছন্দের পণ্যটি কিনছেন তারা। এবার ৫০০ পরিবারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। এক সপ্তাহ আগে থেকে ঘরে ঘরে গিয়ে যাচাই বাছাই করে পরিবার নির্বাচন করেছি।
তিনি জানান, রোজা, ঈদ, প্রবারণা, বন্যার সময়ও এ ধরনের বাজারের আয়োজন করি। উৎসব হোক কিংবা দুর্যোগ, মানুষের পাশে দাঁড়ায় বিদ্যানন্দ।
বিদ্যানন্দের এবারের আয়োজনে নগরের বিভিন্ন এলাকার ৫০০ সুবিধাবঞ্চিত, দরিদ্র, দুস্থ পরিবার ১০ টাকায় ২৬ পদের পণ্য কেনার সুযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে শিশুকিশোররা নতুন জামা পেয়ে খুশি হয়েছে বেশি।
বালা রানী বলেন, আমরা ভাবতেও পারিনি দুর্গাপুজোর আগে আমাদের দরিদ্র সমাজের জন্য কেউ এত আনন্দ আয়োজন করবে! আজ আমরা খুব খুশি বিদ্যানন্দ এই আয়োজন করেছে। তাঁরা নতুন কাপড় দিয়েছে, ১০ টাকা দিয়ে সংসারের পুজোর বাজার করতে পেরেছি।
এআর/টিসি