কলকাতা: ভারতে শুরু হয়ে গেল লোকসভা ভোটের দ্বিতীয় পর্ব। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) এ পর্বে পশ্চিমবঙ্গসহ ১২টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে মোট ৮৮ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এ তিন কেন্দ্রে মোতায়েন করা হয়েছে ৩০ হাজারের বেশি আধা সামরিক সেনাবাহিনী। রয়েছে ১৩ হাজারের বেশি রাজ্য পুলিশ। বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি দ্বিতীয় ধাপেও প্রতিটি বুথে থাকছে ওয়েভ কাস্টিং ব্যবস্থা। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা অফিসে বসেই বুথের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে পারবেন ।
পশ্চিমবঙ্গের তিন লোকসভা কেন্দ্র মিলিয়ে মোট বুথের সংখ্যা পাঁচ হাজার ২৯৮। তার মধ্যে স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা এক হাজার ১৪৩টি। দার্জিলিংয়ে এক হাজার ৯৯, রায়গঞ্জে এক হাজার ৭৩০ ও বালুরঘাটে এক হাজার ৫৬৯ বুথে ভোট নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে দার্জিলিংয়ের ৪০৮, রায়গঞ্জের ৪১৮ এবং বালুরঘাটের ৩০৮টি বুথ স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলার তিন কেন্দ্রে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল তৃণমূল ও বিজেপি। এ ছাড়া এবার সিপিএম, কংগ্রেসসহ বহু স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। সব মিলিয়ে তিন আসনে মোট ৪৭ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করছেন ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৫ ভোটার। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৬ লাখ ৭ হাজার ৩৮৯ জন, নারী ভোটার ২৫ লাখ ১০ হাজার ৩৫৭ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২১০ জন।
পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি কেরালার ২০, কর্ণাটকের ১৪, রাজস্থানের ১৩, উত্তর প্রদেশের আট, মহারাষ্ট্রের আট, মধ্যপ্রদেশের ছয়, আসামের পাঁচ ও বিহারের পাঁচ, ছত্তিশগড়ের তিন এবং ত্রিপুরা, মণিপুর এবং জম্বু ও কাশ্মীরের একটি করে আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সব মিলিয়ে দেশটিতে এই পর্বে মোট ভোটার ১৫ কোটি ৮৮ লাখ। এর মধ্যে আট কোটি আট লাখের বেশি পুরুষ ভোটার। নারী ভোটার সাত কোটি আট লাখের বেশি, তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার সংখ্যা পাঁচ হাজার ৯২৯। ৩৪ কোটি আট লাখ ভোটার এবারই প্রথম ভোট দিচ্ছেন। নতুন প্রজন্মের ভোটারের সংখ্যা তিন কোটি ২৮ লাখ। ১০০ বছরের বেশি বয়সের ভোটারের সংখ্যা ৪২ হাজার ২২৬। ভোটগ্রহণের জন্য এক লাখ ৬৭ হাজার কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সম্পূর্ণ ভোট প্রক্রিয়া চলবে ইলেকট্রনিক ভোটার মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে। এ দফায় মোট এক হাজার ২০৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ দফায় নজর থাকবে কেরালার ওয়েনাড় কেন্দ্রের দিকে। এ আসনে কংগ্রেস প্রার্থী রাহুল গান্ধী। এ ছাড়া দেশজুড়ে একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। মথুরা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অভিনেত্রী হেমা মালিনী। তিরুবন্তপুরম কেন্দ্রে লড়ছেন কংগ্রেস প্রার্থী ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা জাতিসংঘের কূটনীতিক শশী থারুর, এ কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। রাজনন্দগাঁও কেন্দ্রে কংগ্রেসের টিকিটে লড়ছেন ছত্তিশগড়ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাগেল। যোধপুর কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত।
বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে ১৯ এপ্রিল শেষ হয় প্রথম ধাপের ভোট। প্রথম ধাপের ভোট হয় ১৭ রাজ্য ও চার কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের ১০২ আসনে। প্রথম ধাপে ভারতে ভোট পড়ে প্রায় ৬৬ শতাংশ। একমাত্র ব্যতিক্রম বাংলা। ১৯ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার- এ তিন কেন্দ্রে ভোট পড়ে ৭৭ শতাংশ বেশি। পাশাপাশি বাংলার তিন কেন্দ্র থেকে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জমা পড়ে ৪৮৬টি। তবে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হলেও ভোট হিংসায় একজনেরও প্রাণ যায়নি।
এবার দেশটির ৫৪৩ আসনে নির্বাচন হবে সাত ধাপে। চলবে প্রায় দুই মাস ধরে। শুরু হয়েছে ১৯ এপ্রিল। শেষ হবে ১ জুন। ৪ জুন ভোটের ফল ঘোষণা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
ভিএস/আরএইচ