মসজিদের আজান চার্চের বেল মন্দিরের কাঁসর ঘণ্টার একই সুর। মূঢ় মানুষের বুকে আঘাত করে বলে, তোমাদের চৈতন্য হোক।
বিজেপি তূর্য বাজিয়ে নির্বাচনী প্রচারে একাজটাই করতে চেয়েছে বারবার। ছলে-বলে-কৌশলে। তারা জানে, সাম্প্রদায়িকতার কারণে রাষ্ট্রদ্রোহিতা। সংবিধানে সব ধর্মের মর্যাদা সমানভাবে স্বীকৃত। সেটা অস্বীকার করা মানে সংবিধান বিরোধিতা। যা নিঃসন্দেহে দণ্ডনীয় অপরাধ। বিজেপি সেটা জানে বলেই, ইস্যুটাকে এনেছে ঘুরপথে। তারা বলেছে, বাংলাদেশ থেকে বাধ্য হয়ে যেসব হিন্দুরা পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়েছে, তারা শরণার্থী। মানবিক কারণে তাদের থাকার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। আগত মুসলমানরা কিন্তু শরণার্থী নয়, তারা অনুপ্রবেশকারী। পশ্চিমবঙ্গে তাদের কোনও স্থান নেই। নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এলে অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠান হবে।

হিন্দুত্ববাদীদের স্বার্থ রক্ষায় ২০০৩ এ এনডিও সরকারের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী আইএমডিটি অ্যাক্ট বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কংগ্রেস আর বামপন্থীদের প্রতিবাদে তা খারিজ হয়ে যায়। সেই সময় দফতরবিহীন মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাজপেয়ীকে সমর্থন করেছিলেন। উপাধ্যক্ষের সামনে কাগজের বাণ্ডিল ছুঁড়ে বলেছিলেন, এতে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা আছে। তাদের বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠাতে হবে।
মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ফের আইএমডিটি অ্যাক্ট বাতিলের চেষ্টা করলে লাভ হবে না। সংসদের দুই তৃতীয়াংশ সংসদের সমর্থন ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। দল হিসেবে এককভাবে বিজেপি কিছুটা এগিয়ে থাকলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে একই সরকার গড়া তাদের কাছে স্বপ্ন মাত্র। জোট সরকার গড়লেও দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন তিনি পাবেন না। কংগ্রেস আর বামপন্থীদের বিরুদ্ধে যাবে। মোদী সেটা জানেন। অনুপ্রবেশকারীর বিষয়টা কোথাও ইস্যু নয় জেনেও তিনি এটাকে সামনে এনেছেন। শুধু বসিরহাট কেন্দ্রটি দখলের লক্ষ্যে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৪