ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ জুন ২০২৪, ২০ জিলহজ ১৪৪৫

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

নতুন দল করতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের চাণক্য মুকুল রায়!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৫
নতুন দল করতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের চাণক্য মুকুল রায়!

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সাবেক সর্বভারতীয় সম্পাদক তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ, ভারতের সাবেক রেলমন্ত্রী মুকুল রায় নতুন দল তৈরি করতে চলেছেন বলে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে ।

সারদা তদন্ত নিয়ে সিবিআই এর মুখোমুখি হবার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে মুকুল রায়ের।

এর পরেই তাকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

সেই সময় থেকেই মুকুল রায়ের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা সম্পর্কে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলতে থাকে। সাংগঠনিক ক্ষমতার অধিকারী মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন বলে শোনা গিয়েছিলো। কিন্তু বিজেপির রাজ্য তথা কেন্দ্রের নেতারা সেই সম্ভাবনায় আমল দেননি।

সেই সময়ে বিজেপি’র প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে মুকুল রায় দিল্লিতে বৈঠক করেন বলে জানা গিয়েছিল। এরপর জল্পনা শুরু হয় মুকুল রায়ের নতুন দল তৈরি করা নিয়ে।

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে প্রকাশ্যে বা গোপনে সকলেই মুকুল রায়ের সাংগঠনিক ক্ষমতার কথা স্বীকার করেন। তাই যে দলে মুকুল রায় যোগদান করবেন সেই দলের আখেরে লাভই হবে বলে মনে করছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহল।

তবে বিভিন্ন সূত্রে শোনা যাচ্ছে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মুকুল রায় তার নতুন দলের নাম ঘোষণা করতে চলেছেন। ২১ জুলাই পশ্চিমবঙ্গে ‘শহীদ দিবস’ পালন করে তৃণমূল কংগ্রেস। একটি সূত্র জানাচ্ছে ঐ দিনেই বা ঐ দিনের আগে-পরে ঘোষণা হতে পারে নতুন দলের নাম।

সূত্রটি আরও জানাচ্ছে ‘প্রগতিশীল তৃণমূল কংগ্রেস’ বা ‘ঘাসফুল’ এই দুই নামের মধ্যে কোন একটি নাম হতে পারে নতুন এই দলের। আরও খবর পাওয়া যাচ্ছে ইতিমধ্যেই দলের নাম নিবন্ধকরণের প্রক্রিয়া চালু করে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের এই পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ।

তবে এই বিষয়ে কৌশলী রাজনৈতিক নেতার মতই মুখে কুলুপ এঁটেছেন মুকুল রায়। সাম্প্রতিক সময়ে তার দেওয়া ইফতার পার্টিতে হাজির ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন নেতাকেও এই ইফতার পার্টিতে দেখা গিয়েছিল। এই ইফতার পার্টিতে যোগ দেবার পরেই সাসপেন্ড হন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের দুই বিধানসভা সদস্য শিউলি সাহা এবং শীলভদ্র দত্ত। শিউলি সাহা এবং শীলভদ্র দত্ত তৃণমূল কংগ্রেসে মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন।

তবে যথারীতি মুখ খোলেননি মুকুল রায়। তার রহস্যময় স্মিত হাসির মধ্যে বিশ্লেষকরা নানা সম্ভাবনার সূত্র খুঁজে চলেছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, সূত্রের খবর, সব কিছুকে বিচার করে একটা কথাই বলা যায় যে, মুকুল রায় ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে অবশ্যই কোন ক্ষুরধার রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

তবে তার ফল কি হবে এই নিয়েও বিতর্ক আছে। এক দল রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, যদি মুকুল রায় নতুন দল তৈরি করেন তবে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটে ভাগ বসাবে সেই দল। অন্য দিকের বিশ্লেষকরা মনে করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটাররা মমতা বন্দোপাধ্যায়কে দেখে ভোট দেন। সেখানে মুকুল রায়ের নতুন দল সুবিধা করে উঠতে পারবে না। বরং বিরোধী ভোট ভাগ হবার সুফল পাবে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

অবস্থার পরিপ্রেক্ষিত বিচার করে মনে হচ্ছে, খুব অল্প দিনের মধ্যেই তার রাজনৈতিক চালটি দিতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির চাণক্য বলে পরিচিত মুকুল রায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ০১ , ২০১৫
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।