ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ভারতের রাজনীতিতে বাড়ছে মমতার প্রভাব

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৬
ভারতের রাজনীতিতে বাড়ছে মমতার প্রভাব মমতা ব্যানার্জি

কলকাতা: রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়ে দেন, সামনের দিনগুলোতে তিনি বেশি করে নজর দেবেন জাতীয় রাজনীতিতে। তাই নিয়ম করে দিল্লি যাওয়া-আসার বিষয়টিতে মনোযোগ দেবেন।

তিনি এও জানান, পশ্চিমবঙ্গ জয়ের পর তার লক্ষ্য ত্রিপুরা।

 

দলীয় সূত্র বলছে, কেবল ত্রিপুরাই নয়, বাংলার ‘দিদি’ মমতার নজর এখন কেরালার দিকেও। আর অদূর ভবিষ্যতে পুরো ভারতবর্ষ নিয়েও ভাবতে পারেন তিনি।

জাতীয় রাজনীতিতে মমতার পদার্পণ হয় ১৯৮৪ সালে। সেবছর প্রথম লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর থেকেই প্রায় নিয়মিতভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সামলেছেন তিনি। কখনো কয়লামন্ত্রী, কখনোবা যুব ও শিশু কল্যাণ, আবার কখনোবা রেলমন্ত্রী হিসেবে তিনি দিল্লিকেন্দ্রিক রাজনীতিতে পরিচিত হয়ে ওঠেন।

এই মমতার হাত ধরেই ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এখন গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৃণমূল কংগ্রেসের। সেকথা ভালভাবেই জানেন মমতা। যদি ত্রিপুরায় তার অবস্থানও স্পষ্ট হয়ে যায়, তবে রাজ্যসভার সেই অবস্থান হবে আরও পোক্ত।

এই পরিকল্পনার হিসাব কষলে প্রশ্ন আসে, তবে কি এবার মমতার লক্ষ্য লোকসভা নির্বাচন?

যদিও আগে এমন কিছু স্পষ্ট না করলেও যেন ওই ‘লক্ষ্য’ ধরেই মমতা তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার কথা বলে আসছিলেন। তার সেই ফ্রন্ট গড়ার পরিকল্পনা মূলত রাজ্যভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে। কিন্তু একাধিকবারের এই চেষ্টা কার্যকর হয়নি। কারণ রাজ্যভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর আলাদা আলাদা রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা আছে।

এ কারণে ভারতের রাজনীতিতে মূল শক্তি বিজেপি ও কংগ্রেসের বাইরে বামদের তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ে তোলার চেষ্টাও কখনো সফলতা পায়নি।

এই অবস্থায় মমতার লক্ষ্য নিয়ে প্রশ্ন ঘুরছে, কী বিশেষ কারণে মমতা আপতত কেরালা এবং ত্রিপুরাকে বেছে নিচ্ছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মমতা যে দু‘টি রাজ্যকে বেছে নিয়েছেন, সে দুই রাজ্য ত্রিপুরা এবং কেরালায় বাম শাসন চলছে। মমতার রাজনীতি বামবিরোধী হলেও তার কার্যক্রমের সঙ্গে বাম দলগুলোর রাজনীতির অনেকটাই মিল আছে। সে কারণেই হয়তো বাম রাজনীতি দেখে অভ্যস্ত রাজ্যগুলোর মানুষদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতি অনেক দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে মনে করছেন মমতা।

যদি তার ‍আকাঙ্ক্ষা মতো ‘গ্রহণযোগ্যতা’ পেয়েই যায়, তবে দিল্লির রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাব বাড়বে মমতার। কেন্দ্রের রাজনীতিতে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবেন তিনি।

সেক্ষেত্রে তার দিল্লিকেন্দ্রিক স্পষ্ট ‘লক্ষ্য’ হয়ে উঠতে পারে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন। ওই সময়ের মধ্যে দু’টি রাজ্যে নিজের প্রভাব বাড়াতে পারলে লোকসভায়ও নীতিনির্ধারকের জায়গায় চলে যেতে পারেন মমতা।

যদিও ভারতের রাজনীতির ইতিহাসে আঞ্চলিক দলগুলো কোনো সময়েই খুব বড় বা স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবু মমতার সমর্থকরা মনে করেন, তৃণমূল নেত্রী সেই ‘ইতিহাস’ই ভাঙবেন, যেভাবে এককভাবে লড়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ভেঙেছেন পশ্চিমবঙ্গের চার দশকের ইতিহাস।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৬
ভি.এস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।