কলকাতা: মুম্বাইয়ে বুধবার সন্ধ্যায় সিরিয়াল বিস্ফোরণে পশ্চিমবঙ্গের ৩ জন গুরুতর আহত বলে মুম্বাই পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
রাত ১২টা পর্যন্ত এই বিস্ফোরণে ২১ জন নিহত হয়েছে।
জাভেরি বাজারে একটি স্বর্ণের দোকানে বিস্ফোরণ ঘটে সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে। এখানে একটি ছাতার মধ্যে বিস্ফোরক লুকিয়ে রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে। এই অঞ্চলটি ভারতের স্বর্ণ শিল্পের অন্যতম বাজার হিসেবে পরিচিত। ঘটনাস্থলেই ৪ জন নিহত হন।
এখানে স্বণের্র কারিগররা বেশির ভাগই পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি। এই ঘটনায় ৩ জন বাঙালি কারিগর মারাত্মক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে মুম্বাই পুলিশ।
এরপর দাদারে একটি ট্যাক্সিতে (এমএইচ৪৩এ৯৩৮৪) বিস্ফোরণ ঘটে। অপর বিস্ফোরণ ঘটে অপেরা হাউসে সন্ধ্যা ৭টা ৩ মিনিটে ।
দাদার, জাভেরি বাজার ও অপেরা হাইসের বিস্ফোরেণে আইআইইডি দিয়ে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়েছিল। বিস্ফোরণের জন্য টাইমার ব্যবহার করেছিল সন্ত্রাসীরা। এদিন ৮ মিনিটের মধ্যে ৩টি বিস্ফোরণ ঘটে।
এই ঘটনার নিন্দা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেছেন, এটি জঙ্গি হামলা। বুধবার রাতেই মুম্বাই যাচ্ছেন তিনি।
ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন,এই ঘটনায় আমি মর্মাহত। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের অনুমান, এর পেছনে রয়েছে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন ও লস্কর-ই-তৈয়বারা সন্ত্রাসীরা। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গি সন্দেহে দাদারের মানকুর এলাকা থেকে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারকা ওবামা ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি।
এদিকে মুম্বাইয়ের বিস্ফোরণের জেরে কলকাতায় হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। কলকাতা শহরে প্রবেশের বিভিন্ন সড়ক, নেতাজী সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শিয়ালদহ স্টেশন , হাওড়া স্টেশন ও ধর্মতলার কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে তল্লাশি চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
কলকাতার বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা, বিদেশি দূতাবাস, শপিংমল, সিনেমা হলগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে কলকাতা পুলিশ।
হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সবগুলো হামলাই মানুষের ভিড়ের মধ্যে চালানো হয়েছে।
হামলাগুলোর দু’টি দক্ষিণ মুম্বাইয়ের ওপেরা হাউস ও জাবেরি বাজারে। আরেকটি মুম্বাইয়ের মধ্যাঞ্চল দাদার ওয়েস্টে।
জাবেরি বাজারের রাস্তায় খাবারের দোকান প্রচুর। মানুষের চলাচলও বেশি। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) একটি দল মুম্বাইয়ে রওয়ানা হয়েছে। তারা ফরেনসিক তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করবেন।
এ ঘটনায় নয়াদিল্লি, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালোরের শপিংমল, মার্কেটসহ বিভিন্নস্থানে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় ০১০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১১