কলকাতা: ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য ত্রিপুরার আগরতলা শহরে পুলিশি নির্যাতন এবং এ বিষয়ে প্রশাসন ও রাজনীতিকদের উদাসীনতার প্রতিবাদে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এক সাংবাদিক।
তবে শেষ পর্যন্ত তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন।
গত ১০ জুলাই আগরতলায় কংগ্রেসের এক বিক্ষোভ অভিযানের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশি আক্রমণের শিকার হন কর্মরত সাংবাদিকরা। এর মধ্যে ১১ জন সাংবাদিক মারাত্মক আহত হন। তাদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় ‘নগর দর্পণ’ পত্রিকার সাংবাদিক কাজী প্লাবন।
সংবাদ সংগ্রহের সময় কাজীর মানিব্যাগে থাকা মাসের বেতনের ৬ হাজার রুপি পুলিশি আক্রমণের মুখে পকেট থেকে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে থাকা আগরতলার একটি থানার ওসি নারায়ণ সাহার চোখের সামনে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের এক জওয়ান সেটি তুলে নেয়। ওসি নারায়ণের উপস্থিতিতে কাজী তার রুপি ফেরত চাওয়ায় জওয়ানটি তাকে লাঠি দিয়ে পেটায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নির্যাতনের শিকার কাজী পুরো মাসের বেতন খুইয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হলেও শাসক ও বিরোধী রাজনীতিকরা এবিষয়ে কেউই তাকে কোনো সাহয্য করেননি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘মঙ্গলবার রাতে বাসায় ফেরার পথে পুলিশের একটি মোবাইল ভ্যান তার পথ আটকে ভ্রান্তিমূলক জেরা করতে থাকে এবং তাকে চিনতে পারায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয়। ’
বুধবার রাজ্য পুলিশের ডিজি সেলিম আলির কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে ডিজি তার সঙ্গে দেখা করেনি। ফলে কোথাও ন্যাবিচার না পাওয়ার প্রতিবাদে আগরতলা পুলিশ সদর দফতরের সামনেই দুপুর ২টা ২০ মিনিটে আত্মহত্যার উদ্দেশে কাজী প্লাবন নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
মারাত্মক অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় কাজীকে আগরতলার জিবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। পেট্রোল ঢেলে আত্মাহুতির আগে প্লাবন একটি সুইসাইড নোটে সরাসরি অভিযোগ করেন রাজ্য পুলিশ, রাজ্য প্রশাসন এবং কংগ্রেস দলকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ‘প্লাবনের আত্মহত্যায় বাধা দিতে কোনো পুলিশই এগিয়ে আসেনি। ’
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি অবহিত। তবে বিশদভাবে না জেনে কোনো মন্তব্য করতেও রাজি হননি তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১১