নয়াদিল্লি: ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি হাইকোর্টে বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে হরকাতুল জিহাদ (হুজি)। বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো ইমেইলের মাধ্যমে সংগঠনটি হামলার দায় স্বীকার করে।
হুজির পাঠানো ওই ইমেইলের ব্যাপারে জাতীয় তদন্ত সংস্থা প্রধান বলেছেন, ‘আমরা মেইলটি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। ’
নয়াদিল্লির হাইকোর্টে বুধবার সকাল ১১টা ১৪ মিনিটে বোমা হামলার সময় নিয়মিত মামলা-মকদ্দমার কার্যক্রম চলছিল। এসময় মানুষের ভিড়ও ছিল বেশি।
বোমা হামলার তদন্ত সংস্থা এনআইএর (জাতীয় তদন্ত সংস্থা) প্রধান শরদ চন্দ্র সিনহার মতে, মৃত্যুদ-প্রাপ্ত হুজি নেতা আফজাল গুরুর মুক্তি দাবি ছিল জঙ্গি সংগঠনটির। এ কারণেই হামলা চালাতে পারে। তিনি বলেন, harkatuljihadi2011@gmail ইমেইল ঠিকানা থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো একটি বার্তায় বলেছে, ‘নয়াদিল্লি হাইকোর্টে আজকের হামলা আমরাই চালিয়েছি। আমাদের দাবি, আফজাল গুরুর মৃত্যুদণ্ড শিগগির প্রত্যাহার করতে হবে। তা না করলে আমরা আরও হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালাবো। ’
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় অ্যমোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করা হয়েছে। ব্রিফকেস হাতে সাদা শার্ট পরে এক ব্যক্তি হাইকোর্ট ভেতর প্রবেশ করতে গেছে। হামলা তিন থেকে চার ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা হামলায় ১০ ব্যক্তির মৃত্যু নিশ্চিত করেছে।
২০০১ সালের ভারতের পার্লামেন্ট ভবনে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আফজাল গুরুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন ১২ জন ও ৫০ জন আহত হয়েছেন।
নয়াদিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে হাইকোর্ট ভবনের বাইরে হঠাৎই বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় ভবনের বাইরে ৫ নম্বর গেটের সামনে আইনজীবীসহ অনেক সাধারণ মানুষ হাইকোর্টে ভিতরে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষ উদ্ধারকাজ শুরু করেন।
এরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সিরিজ বিস্ফোরণের আশঙ্কায় বোমা স্কোয়াড তল্লাশি চালাচ্ছে। এ ঘটনার পর নয়াদিল্লিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট।
এদিকে, ভয়াবহ বোমা হামলার পরও দিল্লি হাইকোর্টের কার্যক্রম চলছে। হামলার পর হাইকোর্টের বেশ কয়েকটি বেঞ্চ ও সুপ্রিম কোর্ট বিচারিক কার্যক্রম থামিয়ে দেন। তবে বিচারকরা সন্ত্রাসী হামলার কাছে নতি স্বীকার না করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কার্যক্রম শুরু করেন। যদিও হামলায় অনেক আইনজীবী ও আদালত সমাজের অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। তবে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা আদালতে হাজির হতে পারেননি।
হামলার পর হাইকোর্টেল সব বিচারপতি ও প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, একটি ব্রিফকেসের মধ্যে বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল। এই ঘটনায় প্রায় ৫৬ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১১