ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

জঙ্গলমহলে তৃণমূল অত্যাচার চালাচ্ছে, অভিযোগ মাওবাদীদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১১

কলকাতা: সাবেক বামফ্রন্ট আমলে যৌথবাহিনীর সাহায্যে অত্যাচার চালাতো সিপিএমের ‘হার্মাদ’ বাহিনী। এখন ক্ষমতা পরিবর্তনের পর জঙ্গলমহলে একই কাজ শুরু করছে তৃণমূলের ভৈরববাহিনী- এমনটাই অভিযোগ করেছেন মাওবাদী বুদ্ধিজীবী ভারভারা রাও।



জঙ্গলমহল পরিদর্শনরত ভারভারা রাও সেখান থেকে যৌথবাহিনী প্রত্যাহার, নিঃশর্তে মাওবাদী বন্দিদের মুক্তি দাবি জানান।

বুধবার তিনি বলেন,‘বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা ব্যানার্জি অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এমনকি তিনি অনেকবারই জঙ্গলমহল থেকে যৌথবাহিনী প্রত্যাহারের দাবিও করেছিলেন। কিন্তু এখন উল্টো কাজ করছেন। এখন তারই দলের সশস্ত্র কর্মীরা  ‘ভৈরব বাহিনী’ নাম নিয়ে গরিব আদিবাসীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। ’

 মাওবাদীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের শান্তি আলোচনার প্রস্তাবকে কটাক্ষ করে ভারভারা বলেন,‘এই পরিস্থিতিতে শান্তি আলোচনা কীভাবে হবে? চিদাম্বরম, মমতা বলছেন অস্ত্র সংবরণের কথা। তাহলে জঙ্গলমহল থেকে যৌথবাহিনী সরিয়ে নিন তারা। ’

গত মঙ্গলবার জঙ্গল মহলের ঝাড়গ্রামে এসেছেন ভারভারা রাও। এদিন তিনি গিয়েছিলেন নয়াগ্রাম ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রামে। সেখানে ভৈরব বাহিনীর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত আহত পরিবারগুলোর সঙ্গে তিনি কথা বলেন। সেখানেও তৃণমূলের একদল কর্মী তাদের ঘিরে ধরে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ।

এদিকে বিভিন্ন দাবি নিয়ে জঙ্গল মহলের শিলদায় যৌথ বাহিনীর জওয়ানদের বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি যথেষ্ট বিড়ম্বনায় ফেলেছে রাজ্য সরকারকে।

গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো শিলদায় যখন আইআরবি জওয়ানদের অনশন, আন্দোলন চলছে, তখনই ঝাড়গ্রামের নেদাবহরায় বুধবার জনসাধারণের কমিটির নারী কর্মী, সমর্থকদের সঙ্গে সভা করেছেন বুদ্ধিজীবী ভারভারা রাও।

মঙ্গলবার থেকে জওয়ানরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। সেদিন ঝাড়গ্রাম পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) অলোক রাজোরিয়া থেকে বিনপুর থানার আই সি অশোক মিশ্র পুলিশের কোনও আধিকারিকই অবস্থা আয়ত্বে আনতে পারেননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,  মঙ্গলবার রীতিমতো ইট ছুঁড়ে উচ্চপদস্থদের হটিয়ে দেন জওয়ানরা। বুধবারও তাদের আন্দোলন জারি ছিল। ক্যাম্পে রান্না হয়নি এদিন। খাওয়াদাওয়াও বন্ধ রেখেছিলেন জওয়ানরা। এদিনও পুলিশ সুপার চেষ্টা করেছেন জওয়ানদের বুঝিয়ে কাজ শুরু করতে।

অন্যদিকে এদিন ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয় ঝাড়গ্রামে। মাওবাদীদের প্রকাশ্য সংগঠন জনসাধারণের কমিটির ডাকা সমাবেশ বানচাল করতে এদিন লোধাশুলির আগেই কলকাতা থেকে যাওয়া বুদ্ধিজীবীদের একাংশকে আটকায় পুলিশ।

কলাবনীর জঙ্গলের কাছে নয়াদিল্লি থেকে আসা গৌতম নলওয়ালকা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিত ভট্টাচার্য প্রমুখকে আটকে দেয় পুলিশ।

অন্যদিকে ঝাড়গ্রাম গ্রামীণ, নয়াগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ঝাড়গ্রাম শহরে দিকে আসা জনসাধারণের কমিটির সদস্যদের আটকানো হয় নেদাবহরার কাছে। সেখানেই পৌঁছে যান মাওবাদীদের সমর্থক বুদ্ধিজীবী ভারভারা রাও।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।