কলকাতা: ভারত ও বাংলাদেশের সম্প্রীতির নির্দশন রূপে বেশ কয়েকবছর ধরেই কলকাতা-ঢাকা সরাসরি বাস সার্ভিস চলছে। কিন্তু এখন এই রুটের বাসের প্রকৃত ভাড়া কত তা নিয়ে শুরু হয়েছে বির্তক।
সপ্তাহের ৬ দিন, রোববার বাদে এই বাস সার্ভিস কলকাতার সল্টলেকের করুনাময়ী আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাস থেকে সকাল ৭টায় যাত্রা শুরু করে যশোর রোড ধরে বেনাপোল সীমান্ত অতিক্রম করে সন্ধ্যায় ঢাকার কমলাপুরে বিআরটিসি বাসটার্মিনালে যাত্রা বিরতি করে।
সোম, বুধ, শুক্র ভারতের সৌহার্দ নামে দুটি এসি ভলভো বাস যায়। পক্ষান্তরে বিআরটিসির তরফে শ্যামলী পরিবহনের দুটির কথা থাকলেও একটি বাস খারাপ থাকায় দীর্ঘদিন ধরেই একটি আরএমটু বাস কলকাতায় আসে।
উল্লেখ্য, কলকাতাতেও বাংলাদেশের শ্যামলী পরিবহনের মালিক রমেশ ঘোষের ভাই ভারতীয় নাগরিক অবনী ঘোষ শ্যামলী যাত্রী পরিবহনের নামে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূতল পরিবহনের বাস দুটি চালাচ্ছেন বেশ কয়েকবছর ধরে।
কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এই বাসটির প্রকৃত ভাড়া কত? ২ মাস আগেও বাসটির যাওয়া-আসার ভাড়া ছিল ভারতীয় রুপিতে ১ হাজার ২শ। বাংলাদেশি টাকায় তা ছিলো ২ হাজার ২শ।
বর্তমানে এই বাসের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ভারতীয় রুপিতে ১ হাজার ৩শ ও বাংলাদেশি টাকায় ২ হাজার ৪শ। কিন্তু এই ভাড়া বৃদ্ধির জন্য কোন সরকারি নির্দেশ বা প্রজ্ঞাপন কোথাও নজরে পড়েনি।
এই ধরণের একটি আন্তর্জাতিক রুটে ভাড়া বাড়লে কী সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় না? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়ে বাংলানিউজের পক্ষে যোগাযোগ করা হয় কলকাতায় ভূতল পরিবহন নিগমের এমডি আশিষ ঠাকুরের সাথে। কিন্তু তার কার্যালয় থেকে জানানো হয় তিনি বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। তার সাথে দেখা করার বিষয়টি নির্দিষ্ট করে জানানো যাচ্ছে না।
কলকাতায় শ্যামলী যাত্রী পরিবহনের কর্ণধার অবনী ঘোষকেও অনেকবার চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এই বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে বাংলানিউজের হাতে সৌহার্দ বাসের দুটি টিকিট এসেছে।
যেখানে কলকাতা থেকে কাটা টিকিট টিতে ভাড়া লেখার নির্দিষ্ট কলামে কত ভাড়া উল্লেখ না করে ‘ফুল পেড’ শব্দটি লেখা আছে। আর ঢাকা থেকে কাটা টিকিটে লেখা আছে ভাড়া ১২০০। তবে রুপি না টাকা তা লেখা নেই।
কলকাতা থেকে নেওয়া টিকিট ২০১৮৮ ও ঢাকা থেকে নেওয়া টিকিট ২২৯৮৮ এর যাত্রী শুভজিৎ রায় চৌধুরী। যিনি কলকাতার একজন বিশিষ্ট আইনজীবী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এই ধরনের একটি আন্তর্জাতিক বাস রুটে টিকিটের প্রকৃত দাম কী তা জানার অধিকার নেই যাত্রীদের। তাছাড়াও টিকিটে ভাড়ার উল্লেখ না করারটাও যাত্রীদের সাথে প্রতারণা।
তিনি বলেন, ‘এর দায় দু’দেশের সরকার এড়াতে পারে না। এর ফলে কোন যাত্রী যদি সফরকালীন টিকিটের দাম অন্য কারোর কাছ থেকে উপহার বা ট্রাভেল অ্যালাউন্স হিসাবে পান তিনি টিকিটে ফুল পেড লেখা থাকলে কী ভাবে প্রমান করবেন, প্রকৃত ভাড়া কত। ’
কলকাতার সদরস্ট্রিটে শ্যামলীর কাউন্টারে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, কর্মরত এক বলেন, ‘তেলের দাম বেড়েছে। তাই টিকিটের দামও বেড়েছে। আর কাটা বাস (কলকাতা থেকে পেট্রাপোল ও পেট্রাপোল থেকে ঢাকা) এর টিকিটের ভাড়া এর থেকে বেশি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১১