কলকাতা: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার পুরুলিয়া জেলা সফর শেষ করে যাওয়ার ৭২ ঘণ্টা না পেরুতেই মাওবাদীদের হাতে ২ জন তৃণমূলকর্মী খুন হয়েছেন।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পুরুলিয়া জেলার বলরামপুরের গড়বেতা অঞ্চলে তৃণমূলকর্মী অজিত সিং সর্দার ও বাকু সিং সর্দার নিজ বাড়ির সামনে খুন হন।
সূত্র জানায়, সন্ধ্যায় ১৪-১৫ জনের একটি মাওবাদী সশস্ত্র দল আচমকা হামলা চালায়। মাওবাদী নেতা বিক্রমের অনুসারিরা এই হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
এই ঘটনার পরই অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়া থেকে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে বলে জানা গেছে। রাত হয়ে যাওয়ায় অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে হত্যাকারীদের সন্ধানের জন্য অযোধ্য পাহাড়ের সংলগ্ন জঙ্গলে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
এদিকে মাওবাদীদের হাতে দলীয় কর্মীদের খুনের ঘটনার কড়া সমলোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
তিনি এদিন রাতে বলেছেন, ‘এভাবে মানুষ খুন করে মাওবাদীরা পার পাবে না। মানুষ তাদের ক্ষমা করবে না। আর তৃণমুলকে খুন করে, ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না। ’
তিনি আরো বলেন, ‘কলকাতা শহরে থেকে যারা মাওবাদীদের মদদ দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষের রক্ত নিয়ে যারা খেলা করে, তারা কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী হতে পারে না। ’
তৃণমুল সূত্রে জানা গেছে, নিহত দুই তৃণমূল কর্মীর লাশ কলকাতায় আনা হচ্ছে। মঙ্গলবার কলেজ স্কোয়ার থেকে লাশ নিয়ে একটি মৌনমিছিল বের হবে। কলকাতার ময়দানের গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তাদের দলীয় ভাবে শ্রদ্ধা জানানো হবে।
এদিকে, মাওবাদীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের শান্তি আলোচনা পথ বন্ধ হয়ে গেল। কারণ সোমবার মাওবাদী নেতা আকাশ রাজ্য সরকারের মধ্যস্থতাকারীদের চিঠি দিয়ে বলেছেন, রাজ্য সরকার কোনও প্রতিশ্রুতিই রাখেনি। মধ্যস্থতাকারীদের ওপর তারা বিশ্বাস রাখতে পারছে না।
আকাশ তার চিঠিতে আরো বলেছেন, ‘মাওবাদীরা আবার তাদের আর্দশের পথেই চলবে। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর শান্তি আলোচনা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি সরকার। যৌথ বাহিনী যেমন নিয়োগ করা ছিল তেমনই রয়েছে। ’
ভারতীয় সময়:১২৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১১