আগরতলা (ত্রিপুরা) : এলবার্ট এক্কা। ভারতীয় সেনা বাহিনীর জওয়ান।
যুদ্ধ ক্ষেত্রে যারা দারুন সাহসিকতার পরিচয় দেন তাদের যে সব পুরস্কার দে্ওয়া হয় তার মধ্যে পরমবীর চক্রের স্থান সবার ওপরে।
অসীম সাহসিকতার নিদর্শণ রেখে শহীদ হয়েছিলেন এলবার্ট এক্কা সে যুদ্ধে। ছিলেন ১৪ ব্রিগেড অফ দ্য গার্ডসের জওয়ান।
এ রেজিমেন্টের একটি দল সে সময় ঘাঁটি গেড়েছিলেন আগরতলার উপকন্ঠ ডুকলি এলাকায়। হটাত এক দুপুরে খবর আসে জওয়ানদের মার্চ করতে হবে আখাউড়ার দিকে।
এ সময় জওয়ানরা দুপুরের খাওয়া দাওয়া সারছিলেন। খবর পেয়েই যুদ্ধক্ষেত্রের দিকে ছুটে যান তারা। সে দুপুরে খাওয়া হয়নি অনেকেরই। এদের অনেকেই সেবার ফিরে আসেন লাশ হয়ে।
আখাউড়ায় সেদিন মারা যান ১২ ভারতীয় জওয়ান। ঐ শহীদ জওয়ানদের স্মৃতিতে পরের বছর ডুকলিতে তৈরি হয় শহীদ স্মৃতিসৌধ। এলাকার লোকজনই চাঁদা তুলে গড়ে তোলে সৌধটি।
শহীদ জওয়ানদের স্মৃতিতে প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর সেখানে হয় স্মরণ সভা। বিশেষ কিছু আড়ম্বর করে নয়। এলাকার মানুষজন ঐ সৌধে ফুল মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ‘৭১র যুদ্ধে প্রান দেওয়া সেই বীরদের। ১৬ ডিসেম্বরের আগে তারাই পরিষ্কার করে রাখতো নিজেদের গড়া সৌধটি।
কিন্তু রাজ্য সরকার বা ভারত সরকার কারোর পক্ষ থেকেই উদ্যোগ নেওয়া হয়নি সেই স্মৃতি সৌধটিকে সংরক্ষণ করে রাখার। বা প্রতি বছর সেখানে কোন অনুষ্ঠান করার।
এলাকার মানুষ দাবি করেছিলেন অন্তত এই স্মৃতি সৌধটি অধিগ্রহণ করুক সেনাবাহিনী। প্রথম দিকে সেনা বাহিনী তাতে রাজিও হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই উদ্যোগ আর বেশী দূর এগোয়নি।
অথচ সেবারের যুদ্ধে ত্রিপুরার অবদান অনেকেই সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করেন । ১৩ লক্ষ মানুষের ত্রিপুরা সেদিন আশ্রয় দিয়েছিল ১৬ লক্ষ বাংলাদেশি উদ্বাস্তুকে।
অথচ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে ত্রিপুরায় হয় না কোন বড় ধরণের অনুষ্ঠান। অবহেলায় আর আনাদরে থাকে এলবার্ট এক্কাদের বীরগাথা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১১