কলকাতা: একই দিনে দুটি পৃথক ঘটনায় রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার করুণ দশা ফুটে ওঠেছে। তাই আবারাও প্রশ্নবিদ্ধ রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
শুক্রবার রাজ্য সরকারি হেলথ কার্ড থাকা সত্ত্বেও প্রসূতিকে ভর্তি করতে অস্বীকার করে দুটি সরকারি হাসপাতাল। রাস্তাতেই যমজ সন্তানের জন্ম দিয়ে মারা যান প্রসূতি। অন্যদিকে, সরকারি হাসপাতাল থেকে চুরি হয় একটি শিশু।
কলকাতা প্রেস ক্লাবের উল্টো দিকের ফুটপাথে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে বাস করত উষা দেবী। রাতে প্রসব যন্ত্রনা হওয়ায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চিত্তরঞ্জন সেবাসদন হাসপাতালে। পথেই একটি শিশু সন্তানের জন্ম দেন তিনি।
অভিযোগ, তাকে ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দেয় চিত্তরঞ্জন সেবাসদন। এই ধরনের হেলথ কার্ডে ভর্তি নেওয়া যাবে না বলে হাসপাতালের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর উষা দেবীকে নিয়ে যাওয়া হয় শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। সেখানেও ভর্তি না করে ফিরিয়ে দেয়া হয়। ইতিমধ্যেই আরও একটি শিশুর জন্ম দেন উষা দেবী। এর কিছু পরেই মৃত্যু হয় তার।
রোগীর পরিবারের অভিযোগ, তারপরও শিশু দুটিকে ভর্তি করতে অস্বীকার করে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল। কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যে ভোর পর্যন্ত ফুটপাতেই ঠাঁই হয় দুই সদ্যোজাতের।
যদিও, নজিরবিহীন এই অমানবিকতার অন্যতম অভিযুক্ত হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন সেবাসদনের দাবি, উষা দেবীকে সেখানে নিয়েই যাওয়া হয়নি। উষা দেবীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের নাম জড়ানোর পর তড়িঘরি ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক রিপোর্টে এ কথাই জানিয়েছে সেই কমিটি।
শনিবার সকালে পিজি হাসপাতালে দুই সদ্যোজাতকে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দায় সরব হয়েছে সব মহল।
অন্য ঘটনাটি, কদিন আগে চিত্তরঞ্জন হাসপাতালের ম্যাটারনিটি ওয়ার্ডে তানিজা ফতেমা ভর্তি হন। তার দুদিনের শিশুটিকে শুক্রবার দুপুর থেকে আর দেখা যায় নি।
নিখোঁজ শিশুর পিতা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। তার স্ত্রী বুধবার একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। শুক্রবার তানিজা ফতেমা দুপুরে যখন ঘুমচ্ছিলেন তখন শিশুটিকে কেউ তুলে নিয়ে চলে যায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদা শুরু করেছে। সেই সময় যে যে নার্স ও ওয়ার্ড স্টাফেরা উপস্থিত ছিল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্তও শুরু হয়ে গেছে। দুই মহিলাকে এ ব্যাপারে সন্দেহ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১২