ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মনিপুরে নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত ৫

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১২
মনিপুরে নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত ৫

কলকাতা: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জঙ্গিপ্রবণ রাজ্য মনিপুরে শনিবার বিধানসভা নির্বাচনে বেশ কয়েকটি স্থানে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। এদিন নির্বাচনী সংঘর্ষে বিকেল পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।



রাজ্যটির সরকার গঠনের জন্য ৬০ আসনের নির্বাচনকে ঘিরে আগে থেকেই সহিংসতার আশঙ্কা করছিল ভারতের নির্বাচন কমিশন।    

মনিপুর বিধানসভার সবচেয়ে বেশি হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে টিপাইমুখ বিধানসভা কেন্দ্রে। সেখানে চান্দেল জেলার একটি কেন্দ্রে বুথ দখলের জের ধরে সংঘর্ষ বাধে। এতে ৫ জন মারা যান।

বুথ দখল ঠেকাতে দুষ্কৃতিকারীদের গুলিতে আহত হন নিরাপত্তাবাহিনী সিআরপিএফের এক জওয়ান।

একজন নারীসহ ওই ঘটনায় নিহত হন তিন ভোটগ্রহণ কর্মীও।

এই ঘটনার পেছনে নাগা জঙ্গিদের হাত রয়েছে বলে দাবি রাজ্য পুলিশের।

ভারতের ছোট রাজ্যগুলোর মধ্যে একটি মনিপুর। কিন্তু হলে কী হবে, ভোট করাতে নাভিশ্বাস উঠে নির্বাচন কমিশনের।

বিধানসভার ৬০টি আসনের জন্য শনিবার এক পর্বে এখানে ভোট হচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে।

নির্বাচনের নিরাপত্তার জন্য ৩৫০ কোম্পানি অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নির্বাচনের দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে ব্যবহার করা হয় প্রায় ৪২ হাজার নিরাপত্তারক্ষী।

যদিও অন্য সময়ও মনিপুর জুড়ে বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন থাকে সেনাবাহিনী।
 
মনিপুরের জনসংখ্যা ২৭ লাখ। কিন্তু ভোটারের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৬২ শতাংশ অর্থাৎ ১৭ লাখ ৪২ হাজার ভোটার। এদের মধ্যে আবার নারী ভোটারই বেশি। তাদের সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ ৯০ হাজার।

মনিপুর রাজ্যের ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৪০টি ইমফল উপত্যকা এবং ২০টি পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত। মূল লড়াই গত এক দশকের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এবং মনিপুর পিপলস পার্টি, জনতা দল (ইউনাইটেড), এনসিপি ও সিপিআইএমকে নিয়ে গঠিত  জোট ‘পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (পিডিএফ)-এর মধ্যে।

ভোটের ময়দানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীক তৃণমূল (টিএমসি), বিজেপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, আরজেডির মতো দলগুলোও।

কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সেক্যুলার প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্টের শরিক সিপিআই এবার একক শক্তিতে ভোটে লড়ে।

ভোট গ্রহণের জন্য বুথের সংখ্যা দুই হাজার ৩৫৭। এর মধ্যে স্বাভাবিক বুথের সংখ্যা মাত্র ১৬০। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে বাছবিচার না করে, সব বুথেই ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।

এবারের ভোটে মণিপুরের পাহাড়ি এলাকায় ছড়িয়ে থাকা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো ভাবনায় রেখেছে কমিশনকে। ওই ধরনের সংগঠনগুলির প্রভাব যে সমতলে নেই, এমনটা অবশ্য নয়। নির্বাচনী প্রচারের সময় এমন দিন খুব কমই গিয়েছে, রাজধানী ইমফলের মানুষ যেদিন রক্তপাত বা বিস্ফোরণ চাক্ষুষ করেননি।

সমস্যা হচ্ছে, নাশকতার পাশাপাশি ওই জঙ্গি সংগঠনগুলির অর্থও খাটছে এই নির্বাচনে। তাদের মাধ্যমে নিজেদের প্রভাব প্রতিপত্তি খাটাতে কসুর করছেন না প্রার্থীরাও। এই সমস্ত কারণে পাহাড়ি এলাকায় নজরদারির জন্য এবার হেলিকপ্টার ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

নির্বাচনে অবৈধ অর্থের ব্যবহারে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ইবোবা সিং। তিনি তৃণমূলের দিকে আঙ্গুল তুলে বলেছেন, দলটি ভোটের জন্য জঙ্গিদের অর্থ দিচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।