ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ভাষা দিবসের যৌথ অনুষ্ঠান বাতিল করলেন মমতা

রক্তিম দাশ, ব্যুরো চিফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১২
ভাষা দিবসের যৌথ অনুষ্ঠান বাতিল করলেন মমতা

কলকাতা : বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের বেনাপোল-পেট্রাপোল ‘নো ম্যান্স ল্যান্ডে’ দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসা ভাষা দিবসের যৌথ অনুষ্ঠান এ বছর থেকে আর হবে না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও গাইঘাটা এলাকার বিধায়ক ও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাধায় অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।



বাংলাদেশ-ভারত যৌথ অনুষ্ঠান বাতিল হলেও এ বছর ওই একই স্থানে বনগাঁ পৌরসভা একক অনুষ্ঠান করবে বলে অনুমোদন পেয়েছে। বনগাঁ পৌরসভা রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূল থেকে নির্বাচিত।

২১ ফেব্রুয়ারির ওই অনুষ্ঠানে দু’ দেশের শিল্পী ও মানুষের ব্যাপক উপস্থিতিতে সেখানে একটি মিলনমেলার সৃষ্টি হয়ে আসছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘ভারত-বাংলাদেশ গঙ্গা পদ্মা ভাষা ও মৈত্রী সমিতি’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজক এবং দু’ দেশের স্থানীয় প্রশাসন তাতে সহযোগিতা করতো।

আয়োজক কমিটির প্রধান উপদেষ্টা শ্যামল চক্রবর্তী রোববার এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, ‘দু’ দেশের মৈত্রী এবং ভাষার মতো একটি অনুষ্ঠানে তৃণমূল সরকারের বিদ্বেষী মনোভাবে পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কে বাংলাদেশের কাছে ভুল বার্তা যাবে। ’

বেনাপোল ও পেট্রাপোল সীমান্তে জিরো পয়েন্টে গত ২০০৫ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মহান একুশে পালনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। দু’ দেশের ঐতিহ্য , পরম্পরার বার্তাও দেওয়া নেওয়া এই অনুষ্ঠানে।

সীমান্তে জিরো পয়েন্টের এপারে একটি মঞ্চ হয় এবং অন্য প্রান্তে আরেকটি মঞ্চ। পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা ওপারের মঞ্চে গিয়ে এবং বাংলাদেশের শিল্পীরা ভারতের মঞ্চে এসে গান, নৃত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

যৌথ আয়োজক কমিটির সভাপতি ভারতের সাবেক এমপি অমিতাভ নন্দী এবং সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশের এমপি আলহাজ শেখ আফিল উদ্দিন।

শ্যামল চক্রবর্তী বলেন, ‘অনুষ্ঠান বাতিল করার প্রতিবাদ জানাতে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা নাগাদ ওখানে যাবো। দেখা যাক সরকার কি করে। ’

তিনি বলেন, ‘অন্য একটি দেশের সঙ্গে যৌথভাবে করা অনুষ্ঠান এভাবে বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তৃণমূলের ঘৃণ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ’

সেখানে সরকারের বাধা সত্ত্বেও একটি মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

শ্যামল চক্রবর্তী জানান, গত ৯ ফেব্রুয়ারি এই অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়ে প্রশাসন চিঠি ( মেমো নম্বর-জি/৩৪২/আর এম, ৯-২-১২) দেয় কমিটিকে। সকাল আটটা থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু তারপরেই হঠাৎ করে শনিবার বনগাঁর এসডিও চিঠি দিয়ে জানায়, অনুমতি বাতিল করে দেওয়া হলো। ’

এসডিও’র ঐ চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘খাদ্য ও সরবরাহ দফতর মন্ত্রীর কাছে থেকে পাওয়া সংবাদ অনুযায়ী বনগাঁ পৌরসভার তরফে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত জিরো পয়েন্টে ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপন অনুষ্ঠান করা হবে। পৌরসভার তরফে ঐদিন সকাল আটটা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য এবং মাইক ব্যবহারের জন্য  অনুমতি চাওয়া হয়েছে। সেই কারণে গঙ্গা-পদ্মা ভাষা ও মৈত্রী সমিতিকে ঐ একই জায়গায় অনুষ্ঠান করার জন্য আগে যে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল তা আইনশৃঙ্খলার কারণের জন্য বাতিল করা হলো। ’

শ্যামল চক্রবর্তী এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, গঙ্গা-পদ্মা ভাষা ও মৈত্রী সমিতিতে দু’দেশের মানুষজনই আছেন। এখানে দলীয় রঙ দেখা হয় না। তবুও একতরফাভাবে বাতিল করে দেওয়া হলো। ভুল বার্তা যাবে বাংলাদেশের কাছে।

বাংলাদেশ সময় : ১২০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।