কলকাতা: রাজ্যে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সারা ভারতে শ্রমিক-কর্মচারিদের ডাকা হরতালে সরকারি কর্মীদের যোগদান নিষিদ্ধ করতে সরাসরি নির্দেশ জারি করেছে তৃণমূল জোট সরকার।
মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষের জারি করা এক নির্দেশিকায় হরতাল বিরোধিতায় সরকারের অবস্থানকে স্পষ্ট করে দিয়েছে।
এদিন সন্ধ্যায় মুখ্যসচিবের স্বাক্ষরিত নির্দেশনামায় (নং-২৮৩(৬০)-পি এস ডেটেড ২১শে ফেব্রুয়ারি) লেখা হয়েছে, ‘কিছু কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন তাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে আগামী ২৮শে ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা থেকে সারা ভারতজুড়ে শিল্প ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। ওই দিন রাজ্যের সমস্ত সরকারি দপ্তর খোলা রাখা হবে। সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের কাজে যোগ দিতে হবে। ওই দিন (২৮শে ফেব্রুয়ারি) সরকারি কর্মচারীদের কোনো ছুটি অনুমোদন করা হবে না। ’
মুখ্যসচিবের জারি করা নির্দেশনামায় এবার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সংযোজন হলো, ধর্মঘটের দিন সরকারি কর্মচারীদের ছুটি অনুমোদন না হওয়ার বিষয়টি। তৃণমূল জোট সরকারের ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এই প্রথম কোনো ধর্মঘটের আগে সরকারের তরফে জারি করা নির্দেশ লেখা হলো, ‘গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ উইল নট বি গ্রান্টেড এনি লিভ অন দ্যাট ডে। ’
সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বৈরাচারী পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছেন সরকারি কর্মচারীর সংগঠনগুলি।
কর্মচারী সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, ওই দিনের বেতন কাটা হতে পারে। সরকার কর্মচারীকে শোকজ করতে পারে। শোকজের উত্তর সন্তোষজনক না হলে বরখাস্ত পর্যন্ত হতে পারেন। এমনকি এই সরকারের ধর্মঘটবিরোধী আক্রমণাত্মক মনোভাবই এমনই যে কর্মচারীরা ‘ব্রেক অব সার্ভিস’-এর আক্রমণকেও উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
কিন্তু কর্মচারীদের মধ্যে প্রশ্ন সরকার এমন সিদ্ধান্ত কীসের ভিত্তিতে নিতে পারে? কোনো কর্মচারী হরতালের সমর্থক বা বিরোধী না হয়েও ২৮শে ফেব্রুয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার সমস্যা সরকার কীভাবে বিবেচনা করবে?
আগেই রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী পূর্নেন্দু বসু সরকারি কর্মচারিদের ইউনিয়ন করার অধিকার নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে নতুন নিয়ম চালু করবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
আইএনটিইউসির নেতা সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, তারা এই নোটিশ পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যসচিবকে তারা চিঠিও দিয়েছেন। তাদের প্রশ্ন কর্মচারীরা ওই দিন ইল বা সিএল কেন নিতে পারবে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১২