ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

চলে গেলেন ভারতের প্রবাদপ্রতীম ফুটবলার শৈলেন মান্না

কলকাতা ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১২
চলে গেলেন ভারতের প্রবাদপ্রতীম ফুটবলার শৈলেন মান্না

কলকাতা: প্রয়াত হলেন ভারতের সহস্রাব্দের সেরা ফুটবলারের সম্মাননাপ্রাপ্ত ভারতীয় ফুটবলের প্রবাদপ্রতীম খেলোয়াড় শৈলেন মান্না। সোমবার দিবাগত সময় রাত দু’টো নাগাদ কলকাতার সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

কলকাতা ময়দানের মান্নাদা বলে চিরপরিচিত শৈলেন মান্নার জন্ম ১৯২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই ক্লাব ফুটবলে প্রবেশ করেন তিনি। দু’বছর হাওড়া ইউনিয়নে খেলার পর যোগ দেন মোহনবাগানে।

এরপর একটানা ১৯ বছর মোহনবাগান ক্লাবে খেলার নজির রয়েছে শৈলেন মান্নার। খেলার পাশাপাশি সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়াশোনাও চালিয়ে যান শৈলেন মান্না।

তার পায়ের শটে এতোটাই জোর ছিল যে, বিপক্ষের গোলরক্ষক রীতিমতো শঙ্কিত থাকতেন। তার শটের জোর এতোটাই ছিল যে শোনা গেছে, একবার তার শটের বল ধরতে গিয়ে বিপক্ষের গোলরক্ষকের হাত ভেঙে গিয়েছিল।

টানা ১৯ বছর মাঠ কাঁপিয়েছেন মান্নাদা।

১৯৪৮ সালে লন্ডন অলিম্পিকে ভারতীয় ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫১ সালে তার অধিনায়কত্বে এশিয়ান গেমসে ভারতীয় ফুটবল দলের সোনা জয়।

১৯৫০ সালে ফুটবল বিশ্বকাপে সুযোগ পায় ভারতীয় ফুটবল দল। সে সময় বিশ্বকাপ দলের সদস্য ছিলেন শৈলেন মান্না। কিন্তু মুম্বাই থেকেই ফিরিয়ে আনা হয় ফুটবল দলকে। বিশ্বকাপে না যেতে পারার সেই আক্ষেপটার কথা জীবনভর ভুলতে পারেননি মান্নাদা। কথা প্রসঙ্গে চিরকালই সেই ঘটনার উল্লেখ করতেন।

১৯৫২ সালের অলিম্পিক বা ১৯৫৪ সালের এশিয়ান গেমসের মতো আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতায় ভারতকে নেতৃত্ব দেন।   ১৯৫৩ সালে ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ইয়ারবুকে বিশ্বের সেরা ১০ ফুটবল অধিনায়কের মধ্যে জায়গা করে নেন মান্নাদা।

১৯৫২ থেকে ৫৬ সাল, টানা ৪ বার কুয়ানড্রাগুলার টুর্নামেন্ট তার নেতৃত্বে জিতেছিল ভারতীয় ফুটবল দল। ১৯৭১ সালে পদ্মশ্রী সম্মানসহ ২০০১ সালে মোহনবাগান রত্নে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।

খেলা ছাড়ার পরও মাঠের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়নি এই প্রবাদপ্রতীম খেলোয়াড়ের। দীর্ঘদিন মোহনবাগান ক্লাবের প্রশাসনের দায়িত্বেও ছিলেন। ২০০০ সালে তাকে সহস্রাব্দের সেরা ফুটবলারের সম্মান দেয় অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন।

তার মৃত্যুতে ক্রীড়ামহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য তার মৃতদেহ বিধাননগরের বাসভবনে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।