কলকাতা : পৃথিবীর আলো দেখার পর প্রথম জন্মদিনে পৌঁছানোর আগেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ১৩ লাখ শিশুর প্রাণ। ৫ বছরেরও কমবয়সী শিশুর মৃত্যু এ দেশে প্রায় ১৬ লাখ।
ভারতে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশই ভয়াবহভাবে বেড়ে চলেছে। শিশু জন্মের হার ভারতেই সবচেয়ে বেশি। প্রতিবছর এখানে প্রায় ২ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার শিশুর জন্ম হয়।
তাদের মধ্যে বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই পৃথিবীতে আয়ু মাত্র কয়েক সপ্তাহ। একই সঙ্গে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর সংখ্যাও।
পশ্চিমা দেশগুলোতে যে সংখ্যা ১৫ বা তার চেয়েও কম, এমনকি প্রতিবেশী চীনের ক্ষেত্রেও যেটি ৩৮, ভারতের ক্ষেত্রে তা ৫৭৭ (যদিও ১৯৯০-এ গৃহীত এই সংখ্যা এখন কমলেও, সেটি আশাব্যঞ্জক কিছু নয়)।
কিন্তু কেন এই মৃত্যু? স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পরিকাঠামোর অভাবই বহুলাংশে দায়ী।
জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষ থেকে চিকিৎসক অমিত সেনগুপ্ত বাংলানিউজকে বলেন, ‘ শিশুর জন্ম একটি স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু মৃত্যু বাড়ে যখন জরুরি অবস্থায় কোনো বাধা আসে। সে জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোক থাকা দরকার। কিন্তু এই অবস্থায় যদি রোগীকে ৩০-৪০ কিমি পথ যেতে হয়, তাহলে মৃত্যু তো অবধারিত। ’
শিশুমৃত্যুর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। হয় সঠিক সময়ে চিকিৎসক পাওয়া যায় না, নয় তো চিকিৎসা খরচ এত বেশি যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা বহন করা সম্ভব হয় না।
গ্রাম এবং শহরের দিকে তাকালেই এই চিত্র আরো পরিষ্কার হবে। শহরের যেখানে সদ্যজাত শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ৩৪ এরও কম, অথচ গ্রামে তা ৫৫ এরও বেশি।
সঠিক শিক্ষা, উপযুক্ত পরিকাঠামো এবং সঠিক পুষ্টি- এই সমস্যার একমাত্র সমাধান। তবে এই সমস্যা মোকাবিলায় সবচেয়ে যেটা জরুরি, তা হচ্ছে দেশজুড়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
বাংলাদেশ সময় : ১৭৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১২