মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে আয়োজিত এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন কংগ্রেসে আয়োজক দলের প্রধান নাসের আল-খাতের বলেন, এখনও কাতার ৩২ দলের বিশ্বকাপ নিয়েই পরিকল্পনা করছে এবং আরও ১৬টি দল যুক্ত করা এখনও শুধুই সম্ভাবনার পর্যায়ে রয়েছে।
আল-খাতের বলেন, ‘যেসব দেশ সম্ভাব্য সহ-আয়োজক হতে পারেন তা নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।
এর আগে কাতার জানিয়েছিল দেশটি ৪৮ দলের বিশ্বকাপ আয়োজনে আগ্রহী। ২০১০ সালে ৩২ দলের বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব পাওয়ার পর থেকেই ওই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। কাতারের বিরুদ্ধে ঘোষ লেনদেনের অভিযোগ তোলা হয়। এরপর রাশিয়া বিশ্বকাপ শেষে কাতারকে ৪৮ দলের বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য চাপ দিতে থাকেন ফিফা’র বর্তমান প্রধান।
ফিফা’র সুইশ-ইতালিয়ান প্রেসিডেন্ট আসন্ন জুনে সংস্থার বার্ষিক বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার চিন্তা করছেন এবং ৯০ শতাংশ দেশ তার সঙ্গে একমত বলেও জানিয়েছেন।
যদি আগামী বিশ্বকাপ ৪৮ দলের হয়, সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যে কাতারের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে বাড়তি ম্যাচ আয়োজনের কথা বলছে ফিফা। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নাম এসেছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও কুয়েতের। কিন্তু এখানেই আপত্তি কাতারের। কেননা, সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়ার অভিযোগে ছয় প্রতিবেশী রাষ্ট্র কাতারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। যদিও কাতার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যন করেছে।
খাতের জানিয়েছেন, সহ-আয়োজক হিসেবে আগ্রহী আরব আমিরাত কিংবা সৌদি আরবের কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মনে হয় না এটা (সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের সহ-আয়োজক হওয়া) সম্ভব। '
ওমান ও কুয়েত নিয়েও খুব একটা আশাবাদী নন খাতের, ‘আমাদের এটা মনে রাখতে হবে তাদের সামর্থ্য আছে কি না কিন্তু সবচেয়ে বড় বিষয় আগামী তিন বছরে তারা কি করতে পারবে। '
তবে ফিফা এত সহজে কাতারের ওপর থেকে চাপ সরাবে বলে মনে হয় না। এরইমধ্যে ফিফা প্রাথমিক পরিকল্পনা সাজিয়ে বসে আছে। ফিফা’র মতে ৪৮ দলের বিশ্বকাপ হলে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাড়তি আয় করা সম্ভব।
তাছাড়া কাতারের প্রতিবেশী দেশ বাহরাইন, ওমান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্টেডিয়াম ব্যবহারের উপযোগী ফিফা’র এক স্টাডিতে উঠে এসেছে। কাতারকে শুধু বেছে নিতে হবে কোনগুলো তারা গ্রহণ করবে।
কিন্তু বাহরাইন, সৌদি আরব ও ইউএই ২০১৭ সাল থেকে সকল প্রকার বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখায় কাতারের পক্ষে এই অফার গ্রহণ প্রায় অসম্ভব। এজন্যই কুয়েত আর ওমানকে অপশন হিসেবে রাখা হয়েছে। কিন্তু সহ-আয়োজক হতে হলে যেসব বিষয়ের নিশ্চয়তা দিতে হবে তা এই দু’দেশের পক্ষে সম্ভব কি না সেটা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে কাতার।
কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত প্রতি ম্যাচের স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণ সংখ্যা হতে হবে প্রায় ৪০ হাজার করে। যদিও তা ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের জন্য নির্দিষ্ট করা, তবু ২০২২ সালের ক্ষেত্রে এর কাছাকাছি তো অন্তত হতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যে এরকম ৮টি স্টেডিয়াম খুঁজে পেয়েছে ফিফা, যার দুটি আরব আমিরাতে, ১টি সৌদি আরবে আর একটু কুয়েতে।
আরব আমিরাত ও সৌদি আরব বাদ দিলে থাকে মাত্র ১টি স্টেডিয়াম। কিন্তু বাড়তি ম্যাচ আয়োজনের জন্য দরকার কমপক্ষে ৪টি স্টেডিয়াম। আবার শিডিউল জটিলতাও আছে। ২৮ দিনের মধ্যেই বিশ্বকাপ শেষ করতে হবে। ফলে সবমিলিয়ে আগামী বিশ্বকাপে ৪৮ দলের বিশ্বকাপ নিয়ে যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল তা এখন মিলিয়ে যাওয়ার পথে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৯
এমএইচএম