ইরাকের পার্লামেন্ট ১০ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে সমকামী সম্পর্ককে অপরাধ গণ্য করে একটি আইন পাস করেছে।
নতুন এ আইনে ট্রান্সজেন্ডারদের এক থেকে তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
এ আইনের পক্ষের সমর্থকরা বলেছেন, আইনটি দেশে ধর্মীয় মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে সাহায্য করবে।
অপরদিকে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের ওপর সর্বশেষ আঘাত হিসেবে অধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা এ আইনের তীব্র নিন্দা করেছেন।
যারা সমকামিতা বা পতিতাবৃত্তির প্রচার করে, ডাক্তার যারা লিঙ্গ পুনর্নির্ধারণ সার্জারি করে, পুরুষ যারা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে, নারীদের মতো কাজ করে এবং যারা ‘স্ত্রী অদলবদল’ করে তারাও নতুন আইনের অধীনে শাস্তির মুখোমুখি হবেন।
আইনটির আগের খসড়ায় ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে পতিতাবৃত্তি বিরোধী আইনের একটি সংশোধনী পাস হয়েছিল। সেখানে সমকামী সম্পর্কের জন্য মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর শনিবার ইরাকের পার্লামেন্টে পাস করা আইনটির নিন্দা করে বলেছে আইনটি মানবাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য হুমকি হিসেবে সমকামী সম্পর্ককে অপরাধী ঘোষণা করেছে।
বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে আইনটি ইরাকের অর্থনীতি ও বিদেশি বিনিয়োগকে দুর্বল করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ আইন ইরাকি সমাজে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের হুমকির মুখে ফেলেছে। এটি স্বাধীন-বাক ও মত প্রকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং ইরাক জুড়ে এনজিওগুলোর কার্যক্রমকে বাধা দিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ইরান এবং অন্যান্য ইসলামিক দেশেও সমকামিতা বিরোধী কঠোর আইন রয়েছে।
পুরুষ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সমকামী কার্যকলাপ ইসলামিক প্রজাতন্ত্রে একটি অপরাধ। দেশটির শরিয়া-ভিত্তিক ফৌজদারি কোড অনুসারে প্রাপ্তবয়স্কদের এমন সম্পর্ক মৃত্যুদণ্ডযোগ্য।
প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের সমকামিতার শাস্তি প্রথম তিনটি দৃষ্টান্তে ১০০ বেত্রাঘাত। যদি একই অপরাধ চতুর্থবার হয় তবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
সমকামিতার অপরাধ প্রমাণের জন্য অপরাধীদের স্বীকারোক্তি বা চারজন ‘ধার্মিক পুরুষের’ সাক্ষ্যের প্রয়োজন।
সমকামিতার জন্য মৃত্যুদণ্ড খুব কমই কার্যকর করা হয়েছে। ২০২২ সালের জুলাই এবং জানুয়ারিতে দুটি পৃথক মামলায় উত্তর-পশ্চিম ইরানের মারাগেহে চারজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।
সূত্র: বিবিসি
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
জেএইচ