ঢাকা, সোমবার, ২২ আষাঢ় ১৪৩২, ০৭ জুলাই ২০২৫, ১১ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

কারবালা থেকে গাজা: একই নৃশংসতার প্রতিচ্ছবি

রকিবুল সুলভ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৪৩, জুলাই ৬, ২০২৫
কারবালা থেকে গাজা: একই নৃশংসতার প্রতিচ্ছবি গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত এক ফিলিস্তিনির লাশ ঘিরে বসে আছেন কয়েকজন

১০ মহররম, মুসলমানদের জন্য এক শোকাবহ দিন। দিনটি হিজরি বর্ষের প্রথম মাস মহররমের দশম তারিখ, পবিত্র আশুরা হিসেবে পরিচিত।

হিজরি ৬১ সনে কারবালার ময়দানে হযরত ইমাম হোসেন (রা.) এবং তার পরিবারের সদস্যরা সত্য ও ন্যায়ের পথে শহীদ হন।

সেই আত্মত্যাগের করুণ ইতিহাস আজকের গাজার বাস্তবতার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে রয়েছে। গাজার নিরীহ বাসিন্দারা কারবালার মতোই ইসরায়েলের আগ্রাসনে কঠোর নির্যাতন ও যন্ত্রণার শিকার হচ্ছেন। কারবালা থেকে গাজা—একই বেদনা, নৃশংসতা আর একই সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি।

আশুরার দিনের খবর হলো, ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। প্রতিদিনই সেখানে শতশত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরাও ত্রাণের অপেক্ষায় থেকে মরছেন ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মমতায়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষ থেকে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে অন্তত ৭৪৩ জন নিহত হয়েছেন। আর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৫৭ হাজার ৩৩৮ জনের।

এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য গাজায় ফিলিস্তিনিদের গণহত্যার সঙ্গে আশুরার দিনের ঘটনাকে তুলনা করা নয়। এর মূল লক্ষ্য হলো—যদিও দুই ঘটনার মধ্যে এক হাজার বছরেরও বেশি সময়ের ব্যবধান, তবুও অত্যাচারীরা যে একই কৌশল অবলম্বন করেছে, তা তুলে ধরা।

উভয় পক্ষই ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। ইসরায়েল বারবার দাবি করে, ফিলিস্তিন তাদের ‘ঈশ্বরপ্রদত্ত’ ভূমি, তাই এই ভূমি দখল ও ফিলিস্তিনিদের হত্যা তাদের ‘ধর্মীয় অধিকার’। নেতানিয়াহু ধর্মীয় গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে তার নৃশংস অভিযানের পক্ষে যুক্তি দেন।

ইয়াজিদও ধর্মের মুখোশ পরে নিজের অপকর্ম চালিয়েছিলেন। ইসলামিক ইতিহাসবিদরা তাকে অত্যাচারী, মদ্যপ ও অনৈতিক শাসক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু তখনকার ইসলামি খিলাফতের আসন দখল করেই তিনি নিজেকে ধর্মের সেবক বলে পরিচয় দিতেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েল গাজার পানি, খাবার, বিদ্যুৎ সব বন্ধ করে দেয়। যুদ্ধ শুরুর তিন দিন পর থেকে গাজাবাসী পানি পায়নি। ঠিক যেমন কারবালায় ইয়াজিদের বাহিনী আশুরার তিন দিন আগে ইমাম হোসেন (রা.) ও তার পরিবার-অনুসারীদের পানি বন্ধ করে দেয়। তপ্ত মরুভূমিতে তারা পিপাসার্ত অবস্থায় প্রাণ দেন।

ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত হাজার হাজার নারী ও শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুদের হত্যার নিষেধ আন্তর্জাতিক আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইসরায়েল নির্বিচারে শিশুদের হত্যা করে যাচ্ছে। কারবালায়ও একই চিত্র ছিল। ইমাম হোসেনের (রা.) নবজাতক সন্তানকে হত্যা করা হয়েছিল। আরও অনেক শিশু ও কিশোরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

কারবালার হত্যাকাণ্ডের পর ইয়াজিদের বাহিনী ইমাম হোসেন (রা.)-এর পরিবার, বিশেষ করে নারীদের বন্দি করে দামেস্কে নিয়ে যায়। একইভাবে আজ ফিলিস্তিনের বহু নারী ও শিশুকে ইসরায়েলি বাহিনী বিনাবিচারে গ্রেপ্তার করছে, তাদের নির্যাতন করছে, আটকে রাখছে, হত্যা করছে।

ইসরায়েল নিজেদের ‘আত্মরক্ষা’ করছে আর এর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে তুলে ধরছে। কারবালার সময়ও ইয়াজিদের পক্ষের প্রচার ছিল—ইমাম হোসেন (রা.) নাকি খলিফার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন। অথচ হোসেন (রা.) বলেছিলেন, তিনি নানার দেখানো সত্য পথ ফিরিয়ে আনতেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।

ইমাম হোসেন (রা.)-এর পক্ষের মানুষদের ভয় দেখিয়ে, কারাগারে পাঠিয়ে, সমর্থন থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। আজও ইসরায়েল এবং পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বললে লোকজনকে চাকরি হারাতে হয়, সন্ত্রাসী তকমা দেওয়া হয়, চরিত্র হনন করা হয়।

যুক্তরাজ্যের ডানপন্থী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন গাজাকে ‘একটি উন্মুক্ত কারাগার’ বলেছিলেন। গাজা পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর একটি, যেখানে মাত্র ৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১০ কিলোমিটার চওড়া এলাকায় ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস করে।

সবদিক থেকে ঘিরে রাখা—বিমান, স্থল, সাগর—সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরায়েল। মানুষ কোথাও যেতে পারে না। কারবালায়ও হোসেন (রা.)-এর তাঁবু ছিল চতুর্দিকে ঘেরা। পালাবার বা পানি আনার সুযোগও ছিল না।

কারবালার ঘটনার পর শহীদদের মাথা বর্শায় গেঁথে দামেস্কের রাস্তায় প্রদর্শন করা হয়। বিভিন্ন পরিবারকে শৃঙ্খলিত করে জনসাধারণের সামনে ঘোরানো হয়। গাজায়ও বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে ইসরায়েলি সেনারা বন্দিদের উলঙ্গ করে নির্যাতন করছে, নারীদের পোশাক নিয়ে উপহাস করছে।

একটি বিষয় স্পষ্ট—ছোট হোক বা বড়, সব যুদ্ধে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ভোগেন। পুরুষেরা যুদ্ধ শুরু করে, কিন্তু যুদ্ধের খেসারত দিতে হয় নারীদের—স্বামী, ভাই, বাবা, ছেলে হারিয়ে তারা নিঃস্ব হয়ে পড়েন। সেই হারানোর যন্ত্রণা তাদের বুকেই চাপা থাকে।

কারবালার ইতিহাসেও আমরা দেখি, একজন নারীই হয়ে উঠেছিলেন সত্যের অমর কণ্ঠস্বর। যদি হযরত জয়নব (রা.) না থাকতেন, কারবালা হয়তো ইতিহাসের পাতায় বিলীন হয়ে যেত। হযরত ইমাম হোসেন (রা.) সত্যের জন্য প্রাণ দিলেও, সেই সত্যকে বহন করে চলেছিলেন তার বোন।

১০ মহররমের নির্মম হত্যাযজ্ঞের পর, পরিবার ও সহচরদের হারিয়ে, শারীরিক-মানসিক নিপীড়নের মুখে হযরত জয়নব (রা.) মাথা নত করেননি। ইয়াজিদের দরবারে তিনি দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন কারবালার সত্য।

কারবালা থেকে গাজা—সত্যের পক্ষে যারা দাঁড়ায়, তাদের পরাজয় বলে কিছু নেই। সময়ের পরতে পরতে সেই সত্যই বিজয়ী হয়। আর ইতিহাস বারবার বলে দেয়, কে প্রকৃত বিজয়ী, আর কে আসলে চিরন্তন পরাজিত। মহাত্মা গান্ধী একবার বলেছিলেন, আমি হুসাইন (রা.)-এর কাছ থেকে শিখেছি কীভাবে নির্যাতিত হয়েও বিজয়ী হতে হয়, কীভাবে পরাজিত হয়েও জয় ছিনিয়ে নিতে হয়।

২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর হিজবুল্লাহর সাবেক প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ এক টেলিভিশন ভাষণে ‘জেরুজালেমের পথে শহীদদের’ স্মরণ করেন। বৈরুতের দাহিয়ায় সমর্থকদের সামনে তিনি বলেন, ৮ অক্টোবর থেকেই হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধরত।

এই ভাষণের আগে হিজবুল্লাহ তাদের মিডিয়ায় বেশ কিছু টিজার ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে তাদের পরিচিত ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বার্তা তুলে ধরা হয়। তাদের মূল বার্তা ছিল—কারবালার শিক্ষা, যেখানে ন্যায় ও অন্যায়ের চিরন্তন লড়াই চলে আসছে।

কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিজবুল্লাহ বারবার বলে, “প্রতিদিনই আশুরা, প্রতিটি ভূমিই কারবালা”। নাসরুল্লাহ তার ভাষণে গাজার যুদ্ধকে এই ন্যায়ের সংগ্রামের অংশ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, এটি সত্য-মিথ্যার লড়াই, যেখানে ইরান, সিরিয়া ও প্রতিরোধের অন্য শক্তিগুলো যুক্তরাষ্ট্র (‘মহা শয়তান’) ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়ছে।

কারবালায় ইমাম হোসাইন (রা.) আত্মত্যাগের এক অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে গিয়েছিলেন বলেই মুসলমানদের বিশ্বাস। হিজবুল্লাহর দৃষ্টিতে জিহাদ মানে শুধু যুদ্ধ নয়, বরং আল্লাহর পথে শহীদ হওয়া। নাসরুল্লাহ গাজার শহীদদের সম্মান জানিয়ে বলেন, তারা ‘মর্যাদাপূর্ণ শাহাদাত’ অর্জন করেছেন।

ইমাম হোসাইনের (রা.) সময়ের ইয়াজিদ ছিলেন অন্যায় আর অত্যাচারের প্রতীক। নাসরুল্লাহ তার ভাষণে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে তিনি আধুনিক ইয়াজিদ হিসেবে দেখান। তিনি বলেন, ইসরায়েল বর্বর, নিষ্ঠুর ও দখলদার। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সব সময় মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের কথা বলে, অথচ তারা নিরস্ত্র, নিরপরাধ মানুষের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে।

নাসরুল্লাহ পুরো ভাষণে গাজার যুদ্ধকে শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং নৈতিক ও ধর্মীয় লড়াই হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য। তবে তিনি সরাসরি কারবালার কথা উচ্চারণ করেননি। কারণ, আজকের লেবানন, সিরিয়া ও ইরাকের রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রকাশ্যে সাম্প্রদায়িক ভাষা ব্যবহার করা হয় না।

নাসরুল্লাহর এই ভাষণ আল-জাজিরার মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়। তাই তিনি এমনভাবে কথা বলেন, যাতে শিয়া বিশেষ কোনো সংকেত না থাকে এবং সকল শ্রোতার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।

অত্যাচারীরা প্রায়শই নিজেদের ‘ভিকটিম’ হিসেবে তুলে ধরে, যেন নিজেদের অপরাধ আড়াল করা যায়। ইসরায়েলও তাই করছে—অবৈধ দখলদার হলেও তারা নিজেকে সহিংসতার শিকার বলে প্রচার করে। এই ধরনের প্রচারণার মাধ্যমে তারা নিজেদের সেনাদের মগজ ধোলাই করে, যাতে সেনারা অমানবিক কাজ করতেও পিছপা না হয়। একইসঙ্গে, তারা বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহানুভূতিও পেতে চায়।

কারবালাকে যদি হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়, তাহলে ফিলিস্তিনের মানুষের আজকের অবস্থা আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করা যায়। এর জন্য কাউকে শিয়া হতে হবে না, মুসলমানও হতে হবে না। কারবালা কেবল একটি ধর্মীয় ঘটনা নয়, এটি বিশ্বের সব নিপীড়িত মানুষের জন্য এক শক্তিশালী বিপ্লবের অনুপ্রেরণা।

ফিলিস্তিনের শিশুদের দেখা যায়, দখলদার বাহিনীর নির্যাতন সত্ত্বেও তারা পতাকা হাতে প্রতিরোধ করে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের এই সংগ্রাম মনে করিয়ে দেয়, কীভাবে ভিয়েতনামের মানুষ আমেরিকান বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়েছিল, বা আলজেরিয়ার মানুষ ফ্রান্সের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিল। সংখ্যায় ছোট, অস্ত্রে দুর্বল হলেও তারা মাথানত করেনি।

কারবালায় ঠিক এমনটাই ঘটেছিল। ইয়াজিদের অত্যাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ইমাম হোসাইন (রা.) মাত্র ৭২ জন সঙ্গী নিয়ে এক হাজার সৈন্যের বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিলেন। কারবালায় শহীদ হওয়া মানে ছিল, প্রতিরোধের শেষ নিদর্শন। তাই আশুরার দিন কেবল শোক নয়, এটি পক্ষ নির্ধারণের শিক্ষা, কার পাশে দাঁড়াতে হবে? যে ছোট দলটি সত্যের জন্য লড়ে, নাকি ক্ষমতার পক্ষে থাকা অত্যাচারীদের?

কারবালার শিক্ষা হলো শহীদ হওয়া—যা ইসলামে সবচেয়ে বড় সম্মানের বিষয়। ইমাম হোসাইন (রা.) জানতেন তিনি শহীদ হবেন। তিনি জানতেন, তার মৃত্যুই হবে তার সবচেয়ে বড় বিজয়। কারণ তার মৃত্যুই অত্যাচারী ইয়াজিদের আসল মুখোশ খুলে দেবে। শহীদ হয়ে তিনি তার বার্তাকে অমর করে তুলেছিলেন।

আজ গাজায়ও দেখা যায়, যাদের শুধু ‘ফিলিস্তিনি’ পরিচয়ের কারণেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, তারাও শহীদ। তাদের জীবনোৎসর্গই বিশ্বকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, কারা নির্যাতিত, কারা অত্যাচারী। ইমাম হোসাইন (রা.)-এর মতবাদ পৃথিবীর প্রতিটি সময়েই প্রাসঙ্গিক— কেউ বিশ্বাসী হোক বা অবিশ্বাসী, ন্যায়-অন্যায়ের প্রশ্নে কোথায় দাঁড়াতে হয় সেটিই মুখ্য।

কারবালার আরেকটি চিরন্তন দিক হলো—শোক। দেখা যায়, ফিলিস্তিনে শিশুরা কান্নায় ভেঙে পড়ছে, রক্তে ভেজা বাবা-মায়ের নিথর দেহ আঁকড়ে ধরে। তারা বোঝে না কেন তাদের পরিবার হারিয়ে যায়, কেন তাদের জীবন ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এই শিশুরা যেন কারবালার সেই এতিম শিশুদের প্রতিচ্ছবি, যারা বাবা-মা হারিয়ে নিঃসঙ্গ হয়েছিল।

তখন মুসলিম উম্মাহ যেমন কারবালায় ইমাম হোসাইন (রা.)-এর পরিবারের আহ্বানে সাড়া দেয়নি, তেমনি আজও বহু মুসলিম ফিলিস্তিনের আর্তনাদ শুনেও নিশ্চুপ। কারবালা শেখায়—শোক করা অপরাধ নয়। কান্না করা মানবিক। দূর অতীতের বা দূর দেশের জন্য কান্না করা মানুষের হৃদয়ের শক্তি।

গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তা মানবতার ইতিহাসে বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন। রোজা লুক্সেমবার্গের সেই বিখ্যাত উক্তি মনে করা যাক, আমাদের উচিত, সাহসের সঙ্গে সত্য বলার মাধ্যমেই পরিবর্তনের অগ্রদূত হয়ে ওঠা।

আরএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।