দখলদার ইসরায়েলি নৌবাহিনীর চোখ রাঙানির মধ্যেও নিজেদের যাত্রা জারি রেখেছে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহর। গাজা পৌঁছতে বহরটিকে আর মাত্র ৮৫ কিলোমিটার পানিপথ পাড়ি দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বহরটিতে থাকা সংগঠকরা এ তথ্য জানিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্স বার্তায় তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি দখলদার নৌ-বাহিনীর লাগাতার আগ্রাসন সত্ত্বেও এখনও প্রায় ৩০টি নৌযান শক্তভাবে গাজার পথে অগ্রসর হচ্ছে। তারা বর্তমানে গন্তব্য থেকে মাত্র ৪৬ নটিক্যাল মাইল (৮৫ কিলোমিটার) দূরে রয়েছে।
এর আগে ত্রাণসামগ্রী বহনকারী ফ্লোটিলার কয়েকটি নৌযানে হস্তক্ষেপের পর সুইডিশ জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ অংশগ্রহণকারীদের আটক করে ইসরায়েলি বাহিনী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি নৌ-সেনারা ফ্লোটিলার কয়েকটি নৌ-যানে উঠে পড়ে স্বেচ্ছাসেবীদের জিম্মি করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা এক বিবৃবিতিতে জানায়, হামাস-সুমুদ ফ্লোটিলার কয়েকটি জাহাজ নিরাপদে আটক করা হয়েছে এবং যাত্রীদের ইসরায়েলের একটি বন্দরে স্থানান্তর করা হচ্ছে। গ্রেটা ও তার বন্ধুদের স্বাস্থ্য ভালো আছে।
তবে ইসরায়েল ফ্লোটিলার হামাসের সঙ্গে যুক্ত থাকার যে দাবিটা করেছে, তার কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশগ্রহণকারী মানবাধিকারকর্মীরা ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে ‘অবৈধ’ এবং ‘ডাকাতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
সাতবার গাজার ওপর ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন জানিয়েছে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক জলসীমায় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলারকে আক্রমণ করে যাত্রীদের আটক করেছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, নিষ্ঠাবান মানুষদের অপহরণ করা হয়েছে। ফ্লোটিলা কোনো আইন ভাঙেনি। যা অবৈধ তা হলো: ইসরায়েলের গণহত্যা, গাজার অবৈধ অবরোধ এবং মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অন্নহীন করে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা।
এদিকে, ফ্লোটিলার জাহাজ আটক হওয়ার খবরের পর ইতালির বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ কর্মসূচি হয়েছে। দক্ষিণের নগরী নেপলিতে বিক্ষোভকারীরা প্রধান রেলস্টেশনে ঢুকে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। রোমের টারমিনি স্টেশনের প্রবেশদ্বারের কাছে সমবেত হওয়া বিক্ষোভকারীদের চারপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ফ্লোটিলার জাহাজ আটকের প্রতিবাদে ইতালিয়ান ইউনিয়নগুলো ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
এমজে