ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩২, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৭

ইসলাম

কোরআন শুদ্ধ না হলে নামাজও শুদ্ধ হয় না

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭:৪৮, অক্টোবর ৭, ২০২৫
কোরআন শুদ্ধ না হলে নামাজও শুদ্ধ হয় না সংগৃহীত ছবি

নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯টি। তন্মধ্যে অন্যতম একটি হলো- নামাজে সূরা-কেরাত অশুদ্ধভাবে পড়া।

এর দ্বারা নামাজ ভেঙে যায়। এ কারণে সূরা ফাতেহা এবং কমপক্ষে ৪টি সূরা অথবা ছোট ছোট ১২টি আয়াত এবং নামাজ শুরুর তাকবির আল্লাহু আকবার থেকে শুরু করে নামাজ শেষের আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহতুল্লাহ পর্যন্ত এবং সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআনে কারিম শিক্ষা করা প্রত্যেক ঈমানদার নারী-পুরুষের জন্য ফরজ।

অনেকে নামাজ যথারীতি আদায় করলেও সূরা-কেরাত সহিহ-শুদ্ধ করার ব্যাপারে সম্পূর্ণরূপে উদাসীন। সব ধরনের লাজলজ্জা ত্যাগ করে কোরআন শেখার ব্যাপারে কমপক্ষে নামাজ আদায়ের উপযোগী সূরা-কেরাতসমূহ শেখার জন্য প্রত্যেক নামাজিকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ, পদক্ষেপ নেওয়া সব কাজের বড় কাজ, সব ধরনের ধর্মীয় কাজের আগের কাজ নিঃসন্দেহে।
আল্লাহতায়ালার সর্বপ্রথম আদেশ কোরআন শেখা ও পড়াকে গুরুত্ব না দেওয়া কাম্য নয়। সমাজের অনেকেই সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন শেখা ও পড়াকে উপেক্ষা করে অনেক ধর্মীয় কাজ করেন, ধর্মের খেদমতে জীবন কাটান, আল্লাহওয়ালা কাজ করেন, নবীওয়ালা কাজ করেন। কিন্তু নামাজে কোরআন সহিহ করে পড়তে অপারগ। এটা নিয়ে কোনো টেনশন নেই। এমন মনোভাব কাম্য নয়।

ইসলামী স্কলারদের মতে, আল্লাহতায়ালার সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান আদেশ পালন কোরআন পাঠ না করার কারণে, সহিহভাবে কোরআন না শেখার কারণে, সহিহ-শুদ্ধভাবে সূরা-কেরাত, দোয়া-দরূদ না শিখে নামাজ আদায়কারী হয়েও কিছু নামাজির নামাজ নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। এ বিষয়ে নামাজিদের সতর্কতা ও জরুরি পদক্ষেপ কাম্য।
 
কোরআন শেখা খুব কঠিন কাজ নয়। প্রতিদিন আধাঘণ্টা থেকে একঘণ্টা সময় ব্যয় করলে ৩০-৪০ দিনে মাত্র ৩০-৪০ ঘন্টা ব্যয়ে কোরআন শেখা সম্ভব। মুসলমানের জন্য কোরআন শেখা একটি জরুরি বিষয়। আমরা আমাদের সন্তানদের অনেক কিছু বানাতে চাই। নিজেরাও অনেক কিছু হতে চাই বৈকি। তবে সব কিছুর ঊর্ধ্বে আমাদের মনে রাখতে হবে, শ্রেষ্ঠ হওয়ার এবং সন্তানদেরকে সেরা ও আলোকিত মানুষ বানানোর একমাত্র পন্থা হচ্ছে- কোরআন শেখানো ও প্রয়োজনীয় ইসলামী জ্ঞান শিক্ষা দেওয়া। এ প্রসঙ্গে এক হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই শ্রেষ্ঠ- যে কোরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়। ’

কোরআন শেখা হলো- আনন্দ প্রকাশের মাধ্যম ও পুঞ্জীভূত সম্পদ বিশেষ। সেরা আনন্দের জন্য আর সেরা সম্পদের অধিকারী হওয়ার জন্য কোরআন শেখার কোনো বিকল্প নেই। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘কোনো পিতা তার সন্তানকে উত্তম শিষ্টাচার শিক্ষা দেওয়ার চেয়ে উত্তম কোনো জিনিস দিতে পারে না। ’ আর উত্তম শিষ্টাচারের মূল উৎস হচ্ছে কোরআনে কারিম। তাই কোরআন না শিখে, না পড়ে, না বুঝে থাকার কোনো সুযোগ নেই।

একটু বয়স বেশি হয়েছে বলে, চক্ষুলজ্জায় কোরআন না শেখা, কোরআন সহিহ-শুদ্ধভাবে পাঠে উদ্যোগী না হওয়া দুঃখজনক বিষয়। ইসলামী স্কলারদের অভিমত হলো- প্রকৃত ঈমানদার মুসলিমকে সব বাঁধা অতিক্রম করে কোরআন শিখতে হবে, কোরআন পড়তে হবে, কোরআন বুঝার ও মেনে চলার চেষ্টা করতে হবে।

কারণ, কোরআন শেখা ও তেলাওয়াত করা আল্লাহর আদেশ; কোরআন শেখা ফরজ। আল্লাহর আয়াতকে ভুলে থাকলে কিয়ামত দিবসে অন্ধ হয়ে উঠতে হবে। এ প্রসঙ্গে সূরা ত্বোয়া-হার ১২৪ নম্বের আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘এ পৃথিবীতে যারা সঠিক পথের সন্ধান পেতে চায় না, কেয়ামতের দিন তারা অন্ধ অবস্থায় কবর থেকে ওপরে উঠবে। ’

কাজেই আসুন, কোরআন শেখার বিভিন্ন অনলাইন/অফলাইন কোর্সে অংশগ্রহণ করে কোরআন শিখি, প্রয়োজনে প্রাইভেট বা একাকি হলেও শিখি। অভিভাবকরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেই। সেই সঙ্গে সমাজের দায়িত্ব সচেতনরা সমাজ সেবার অংশ হিসেবে কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করে অন্যদেরকে কোরআন শেখানোর ব্যবস্থা করি। অাল্লাহতায়ালা আমাদের তওফিক দান করুন। আমিন।

এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।